জনতা ব্যাংক লোন পদ্ধতি

বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ব্যাংক হলো জনতা ব্যাংক।

অন্যান্য ব্যাংকের মতো জনতা ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে । জনতা ব্যাংকের বিভিন্ন লোন স্কিম রয়েছে।

আরো পড়ুন , ব্র্যাক ব্যাংক লোন পদ্ধতি

আজকে আমরা জনতা ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের লোন স্কিম সম্পর্কে জানব।

আজকে আমরা জানব জনতা ব্যাংক কোন কোন ক্ষেত্রে লোন দেয়, কি পরিমানের দেয় তাদের সুদের হার কত , কত দিন মেয়াদে দেয় এবং কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন হয় ইত্যাদি ।

তাহলে চলুন আর সময় নষ্ট না করে , জেনে নেওয়া যাক।

 আপনার কোন ক্যাটাগরি লোন প্রয়োজন তা নিচ থেকে দেখে নিতে পারেন।

জন্য ব্যাংক কৃষি লোন

আরো পড়ুন , ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি

জনতা ব্যাংক কৃষি ঋণ

জনতা ব্যাংক সকল প্রকার শস্য, মাছ , কলা  , ডাল, মসলা ,তৈলবীজ , পান , ইক্ষু , ফুল , লবন উৎপাদন , জৈব সার উৎপাদন,উন্নত জাতের গাভী পালন, মহিষ, ছাগল , ভেড়া পালন, দুগ্ধ উৎপাদন ছাড়াও সকল প্রকার কৃষি কাজের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে ।

কৃষি কাজের সাথে জড়িত সকল এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন । ঋণের পরিমাণ আপনার কৃষি জমির পরিমাণ এর সাথে হিসাব করে দেওয়া হবে । যা ৯ শতাংশ সুদে পরিশোধ করতে হবে এবং ঋণ পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন ২.৫ একর জমি জামাত হিসেবে ব্যাংকের কাছে রাখতে হবে।

 চলতি মূলধন ঋণ

পাঠ ব্যবসা কিংবা যে কোন প্রকার পাঠ্যদ্রব্য উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ঋণের পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়; যা এক বছরের মধ্যে নয় শতাংশ সুদ সহ পরিশোধ করতে হবে।

গ্রীন ফাইন্যান্সিং ( সৌর বিদ্যুৎ লোন )

নিজের বাসা বাড়ি কিভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা অর্থাৎ সৌরভ প্যানেল কিংবা সৌর বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ঋণের পরিমাণ এবং সুদের পরিমাণ নির্দিষ্ট নয় । এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়।

জনতা ব্যাংক সরকারি কর্মচারীদের জন্য হোম লোন 

বাংলাদেশের যে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কর্মকর্তা – কর্মচারী , সামরিক – বেসামরিক কর্মকর্তারা এই জন্য আবেদন করতে পারবেন   আবেদনকারীর মাসিক বেতন অবশ্যই অনলাইন অথব EFT এর মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।

এই লোনের জন্য আবেদন করতে এবং আবেদনের সকল প্রকার তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন

জনতা ব্যাংক পল্লী ঋণ

পল্লী ঋণ

বিত্তহীন কিংবা স্বল্পবিত্ত গরিব পুরুষ বা মহিলাদেরকে তাদের পেশা বা দক্ষতা অনুযায়ী এই ঋণ দেওয়া থাকে।

ট্রেনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার জন্য ১১ শতাংশ সুদে পরিশোধ করতে হবে । ঋণ পরিশোধের সময় নির্দিষ্ট নয় এবং অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য তৃতীয় পক্ষের জামানত  এবং ঋণ ৫০ হাজারের অধিক হলে নির্দিষ্ট সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট জামানত হিসেবে রাখতে হবে।

 কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ঋণ

ট্যানারি শিল্পের সাথে জড়িত বা  কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ঋণের পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়। যা সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে নয় শতাংশ সুদ হারে পরিশোধ করতে হয়।

জনতা ব্যাংক লিমিটেড কমার্শিয়াল রিয়েল এস্টেট লোন

ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করার জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ভবন নির্মাণের ৬০ শতাংশ টাকা লোন হিসাবে পাওয়া যাবে । যা ১২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি মুনাফা হারে ভাড়ার কাজে নির্মিত ভবনের জন্য ১৫ বছর এবং দোকান বা শপিংমল ইত্যাদি ভবনের জন্য ৩ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

এই ঋণ জনতা ব্যাংকের সকল সকার জন্য প্রযোজ্য নয়।  নির্দিষ্ট কিছু শাখায় এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

জনতা ব্যাংক লিমিটেড একক গৃহ নির্মাণ ঋণ ও এপার্টমেন্ট ক্রয় ঋণ

নিজের থাকার জন্য বাড়ি বা ফ্লাট তৈরি অথবা বাড়ি বা এপার্টমেন্ট কেনার জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

ঋণের পরিমাণ উক্ত ভবন অ্যাপার্টমেন্টের ৬০ শতাংশ অথবা যতটুকু পরিশোধ করা সম্ভব ততটুকুই দেওয়া হবে । যা ১১ শতাংশ সুদে ১৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

কনজ্যুমারস ফাইন্যান্সিং

সাইবার ক্যাফে , চাকুরীজীবি, ডক্টর, গৃহ সংস্কার , গাড়ি ক্রয়, সরকারী কর্মচারীদের গৃহ নির্মাণ , জনতা কেয়ার স্বাস্থ্য সেবা , জনতা সাপোর্ট পেনশন , শিক্ষা ইত্যাদির জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়।

লোন পাওয়ার জন্য গ্রাহককে সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবি হতে হবে । মুল বেতনের সর্বনিম্ন ১২ গুন ঋণ পাওয়া যাবে। যা ৯% সুদ হারে ২-৪ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

জনতা ব্যাংক শিক্ষা লোন 

যারা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি কিংবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং নিজের পড়ালেখা শেষ করতে চান । তাদের জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে । 

জনতা ব্যাংক শিক্ষা লোন

আরো পড়ুন, রূপালী ব্যাংক লোন সমূহ

ঋণ পাওয়ার জন্য গ্রাহকের অবশ্যই দুই বছর চাকরি করতে হবে এবং বেতন সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা হতে হবে । সাথে সাথে তার পূর্ববর্তী সকল পরীক্ষায় ন্যূনতম সিজিপিএ 2.75 পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।

এই ঋণ জামানত ছাড়া ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা । জামানত সহ সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। সুদের হার ১১ শতাংশ যা ৫ বছর মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

জনতা কেয়ার – স্বাস্থ্যসেবা ঋণ

কোন জটিল রোগ আক্রান্ত হলে; এবং চিকিৎসার জন্য টাকা না থাকলে।

জনতা ব্যাংকের কাজের জন্য জনতা স্বাস্থ্য সেবা ঋণ নামে লোন দিয়ে থাকে । 

লোনের জন্য গ্রাহককে অবশ্যই সরকারি বেসরকারি কিংবা স্বায়ত্বশাসিত  সংস্থায় চাকরি করতে হবে ।

ন্যূনতম দুই বছর চাকরি করতে হবে এবং বেতন সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা হতে হবে।

লোনের পরিমাণ জামানদ ছাড়া 2 লক্ষ টাকা এবং জামানত সহ সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে ।

যা পাঁচ বছর থাকে বছর অর্থাৎ ৬০ কিস্তির মধ্যে ১১% সুদে পরিশোধ করতে হবে।

জনতা সাপোর্ট – পেনশনভোগীদের জন্য বিশেষ ঋণ

যে কোন সরকারি ,বেসরকারি কিংবা স্বাস্থ্যশাসিত সংস্থা হাতে অবসরকৃত ব্যক্তিগণ ।

যারা জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের পেনশনের টাকা পেয়ে থাকেন।

তারা এই ঋণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন  ।

যে শাখা হতে পেনশনের টাকা উত্তোলন করেন সেই শাখা হতে ঋণ নিতে পারবেন ।

ঋণের পরিমাণ মোট পেনশনের টাকায় ২৪ গুণ যা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৫ বছরের মধ্যে নয় শতাংশ সুদ হারে পরিশোধ করতে হবে।

বিশেষায়িত ঋন (মহিলা উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, তাঁত ঋন ইত্যাদি)

প্রশিক্ষিত যুবক , নারী উদ্যোক্তা , ক্ষুদ্র ব্যবসা, তার শিল্প  ইত্যাদি কাজের জন্য এই ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে ।

এই ঋণের জন্য অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স সহ ব্যবসা থাকতে হবে ।

লোনের পরিমাণ জমানদ ব্যতীত সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা যা দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ৯ শতাংশ সুদ হারে পরিশোধ করতে হবে। 

আরো পড়ুন, পূবালী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি

আমার শেষ কথা 

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে যদি এরকম আরো অন্যান্য ব্যাংকের লোন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এখানে ক্লিক করুন।

এছাড়া নিত্য নতুন তথ্যের জন্য আমাদের ব্লগটি ঘুরে দেখতে পারেন। 

Leave a Comment