আমরা সব সময় টাকা-পয়সা জমানোর চিন্তাভাবনা করি ।
কিন্তু ঠিকমতো জমাতে পারি না ,খরচ হয়ে যায় ।
এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের ডিপিএস করে থাকি ।
বাংলাদেশের অনেক গুলো ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খোলা সুবিধা দিয়ে থাকে ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক তাদের মধ্যে একটি।
বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ব্যাংক হল ডাচ বাংলা ব্যাংক ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক এর জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের অনেক বেশি ।
এদের রয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজারের বেশি ফাস্ট ট্রাক এবং এটিএম।
রয়েছে অনেকগুলো শাখা এবং এজেন্ট আউটলেট।
এইসব জায়গায় ডাচ বাংলা ব্যাংক এর ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায় ।
তাহলে আসুন আর কথা না বাড়িয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংক এর ডিপিএস সম্পর্কে জেনে নেই।
আরো পড়ুন,
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস সমূহ
ডাচ বাংলা ব্যাংকে বেশ কয়েক প্রকার ডিপিএস স্কিম রয়েছে ।
তার মধ্যে কিছু নিচে দেওয়া হল:
- ডিপোজিট প্লাস স্কিম ।
- পর্যায়ক্রমিক ডিপিএস স্কিম ।
- বছরের দেড়গুণ স্কিম ।
- শিশু শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম ।
- পেনশন প্লাস স্কিম ।
- মিলেনিয়ার ডিপোজিট স্কিম ।
ডাচ বাংলা ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট এই কয়েকটি স্কিম করা যায় ।
আপনি কোন প্রয়োজনে ডিপিএস একাউন্ট করবেন তারপর উপত্র নির্ভর করে উপরে উল্লেখিত পাঁচটার মধ্যে যখন একটি স্কিম নির্বাচন করতে পারবেন ।
আমি কয়েকটি ডিপিএস স্কিম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত ভাবে বলছি ।
বাকিগুলো আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংকে যোগাযোগ করলে ।
অথবা তাদের কাস্টমার সার্ভিসের ফোন করলেই জানতে পারবেন ।
তাই অযথা আর্টিকেলটি বড় করিনি ।
ডিপোজিট প্লাস স্কিম
এবার শুরু করি ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপোজিট প্লাস স্কিম থেকে ।
আসুন দেখা যাক ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপোজিট প্লাস স্ক্রিনের বৈশিষ্ট্য সমূহ ।
বৈশিষ্ট্য সমূহ
- তিন বছর, পাঁচ বছর ,আট বছর এবং দশ বছরের জন্য এই ডিপিএস করা যাবে ।
- মাসিক কিস্তির পরিমাণ ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ এর গুণিতক হিসাবে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
- খুবই ভালো বেনিফিট দিয়ে থাকে ।
লাভের হার
এখানে লাভ নির্ভর করে আপনি কত টাকা এবং কতদিনের জন্য ডিপিএস করেছেন ।
সময় এবং টাকার পরিমাণ বেশি হলে লাভের পরিমাণও বেশি হয় ।
আবার সময় এবং টাকার পরিমাণ কম হলে লাভের পরিমাণও কম হয় ।
কত দিন এবং কত টাকা পরিমাণ ডিপিএস করলে লাভের হার কেমন হয় সেই সম্পর্কে নিচে একটি চার্ট দেওয়া হল ।
উপরোক্ত চার্ট থেকে আমরা দেখতে পাই তিন বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ডিপিএস একাউন্ট করা যায় ।
এবং ৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত মাসে কিস্তি নির্ধারণ করা যায় ।
প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পরে লাভের পরিমাণও আমরা দেখতে পাই ।
মিলেনিয়ার ডিপোজিট স্কিম
আপনি যদি ডাচ বাংলা মিলেনিয়ার ডিপোজিট স্কিম হিসেবে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে চান ।
তাহলেও সেটাও করতে পারবেন ।
এই স্কিম সম্পর্কে নিচে তথ্য দেওয়া হলো ।
বৈশিষ্ট্য সমূহ
- তিন বছর, পাঁচ বছর ,আট বছর এবং দশ বছরের জন্য এই ডিপিএস করা যাবে ।
- মাসিক কিস্তি হিসেবে টাকা আপনার মর্জি মতো নির্ধারণ করতে পারবেন ।
- খুবই ভালো বেনিফিট দিয়ে থাকে ।
লাভের হার
নিচের চার্ট থেকে এই একাউন্টের লাভের হার সম্পর্কে তথ্য পেয়ে যাবেন ।
ভালো করে নিচের চার্টটি লক্ষ্য করুন ।
শিশু শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম
আপনি যদি আপনার বাচ্চার ভবিষ্যৎ এর পড়ালেখার খরচ নিশ্চিত করতে ডিপিএস একাউন্ট করার চিন্তা করেন ।
তাহলে আপনার জন্য রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শিশু শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম ।
আপনি এই ডিপিএস একাউন্টের মাধ্যমে আপনার শিশুর জন্য ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে টাকা পয়সা জমাতে পারবেন ।
এতে আপনার শিশুর ভবিষ্যতের উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া বা দেশেই ভালো শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবেন ।
বৈশিষ্ট্য সমূহ
- প্রতি মাসে কিস্তির হার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত যে কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে । ( ৫০০ এর গুণিতক হিসেবে ) ।
- তিন বছর, পাঁচ বছর, আট বছর এবং ১০ বছরের মেয়াদে ডিপিএস একাউন্টি খোলা হয়ে থাকে । অর্থাৎ কম সময়ে থেকে শুরু করে অনেক বেশি সময়ের জন্য এই একাউন্টটি করতে পারবেন ।
- খুবই ভালো পরিমাণে লাভ দিয়ে থাকে ।
লাভের হার
শিশুদের শিক্ষার জন্য ডিপিএস একাউন্ট খোলার খুললে অনেক ভালো পরিমাণে লাভ দিয়ে থাকে ।
সেই লাভের পরিমাণ নিচের একটি চার্টা এর মাধ্যমে উল্লেখ করা হলো ।
ডিপিএস এর মেয়াদ এবং মাসিক কিস্তির উপর নির্ভর করে লাভের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে ।
এছাড়াও লাভের টাকার উপর সরকারি করার করা হয়ে থাকে ।
উক্ত করার কেটে নেওয়ার পর লাভের পরিমাণ চার্টএ দেখানো হলো।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট তৈরির পদ্ধতি
আমরা তো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিম সম্পর্কে জেনে নিলাম ।
এবার আমরা যদি ডাচ বাংলা ব্যাংকে ডিপিএস করতে যাই ।
তাহলে আমাদেরকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট বা ডিপোজিট একাউন্ট তৈরি করতে হবে ।
এবার আসুন জেনে নেই ডিপোজিট একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম ।
ডাচ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে কর্তব্যরত অফিসার কে বললেই তারা ডিপিএস একাউন্ট করে দেবেন ।
এর জন্য হয়তো আপনার কাছে কিছু কাগজপত্র চাইবে এবং কিছু ফরম পূরণ করে দিতে হবে , সাথে ছবিও লাগতে পারে ।
ডিপোজিট একাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- ডিপোজিট একাউন্ট করতে গেলে অবশ্যই গ্রাহকের বয়স ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি হতে হবে ।
- গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ছবি প্রয়োজন হবে ।
- এছাড়া জন্য একজন নমিনি নির্বাচন করতে হবে । নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ছবি প্রয়োজন হবে ।
- এগুলো ছাড়াও ব্যাংক আরো অন্যান্য কাগজপত্র চাইতে পারে । এইটা বাংকের শাখায় নির্ভর করে ।
সুবিধা
অন্যান্য ব্যাংক থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট এর কিছু সুবিধা রয়েছে ।
তার মধ্যে কয়েকটি সম্পর্কে আমি নিচে আলোচনা করছি ।
- খুব দ্রুত অ্যাকাউন্ট ওপেন করা হয় এবং কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে কোন ঝামেলা হয় না ।
- নিজের প্রয়োজন মত একটি তারিখ ঠিক করতে হয় মাসে কিস্তি দেওয়ার জন্য ।
- ডাচ বাংলা ব্যাংকে যদি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বা সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকে । তাহলে সেখান থেকেই মাসিক কিস্তি দেওয়া যায় ।
- এসএমএস এর মাধ্যমে একাউন্টের অবস্থা জানা যায় ।
- ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে ডিপিএস এর মাসিক কিস্তির টাকা পরিশোধ করা যায় ।
- দেশব্যাপী অনেকগুলো এটিএম এবং ফাস্ট ট্রাক রয়েছে । এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য এজেন্ট আউটলেট । এ সকল সার্ভিস পয়েন্টে গিয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস এর মাসিক কিস্তি আমরা সহজে জমা দিতে পারি ।
আমার শেষ কথা
আমরা সকলেই জানি ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি একটি জনপ্রিয় ব্যাংক ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক এর ডিপিএস অতটাও জনপ্রিয় না হলেও ।
আমাদের এই ব্লগে আমরা আরো বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট সম্পর্কে লিখেছি ।
আপনি সেগুলোর সাথে তুলনা করে দেখতে পারেন ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক একটি অত্যাধুনিক ব্যাংক ।
এর রয়েছে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা , দেশব্যাপী অনেকগুলো এটিএম এবং ফাস্ট ট্রাক ।
আরো রয়েছে গ্রাম অঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য এজেন্ট আউটলেট ।
এ সকল সার্ভিস পয়েন্টে গিয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিপিএস এর মাসিক কিস্তি আমরা সহজে জমা দিতে পারি ।
এ ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে খুব দূরে না গিয়েও আমরা সহজেই বাড়ির কাছে থেকেই ডিপিএস এর মাসিক কিস্তি দিয়ে দিতে পারব ।
অথবা বাড়িতে বসেই কারেন্ট বা সেফিংস অ্যাকাউন্ট থেকে অথবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে মাসিক কিস্তি দিয়ে দেওয়া যায় ।
এটা অনেকটা ভালো সুবিধা।
যা অনেক ব্যাংকেই নেই ।
সে ক্ষেত্রে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ভিড়ের মধ্যে টাকা জমা দেওয়া অনেকটা বিরক্তিকর ব্যাপার ।
আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই ।
এই পোস্টের মধ্যেই কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে বা নতুন কোন তথ্য জানতে চাইলে কমেন্ট করে জানান ।