ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা

ক্যান্সার শব্দটি শুনলেই আমাদের কম বেশি সবারই ভয় লাগে । 

আমাদের দেহে নানা রকম ক্যান্সার হয়ে থাকে ।

যেমন: ব্লাড ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সার ।

ক্যান্সারের বেশ কয়েকটি পর্যায়ে থাকে ।

শুরুতেই রোগ শনাক্ত করা গেলে তা থেকে চিকিৎসার মাধ্যমে নিস্তার পাওয়া যায় ।

কিন্তু যদি বেশ কয়েকটি স্টেপ বা ধাপ পার হয়ে যায় তাহলে আর বাঁচার কোন উপায় থাকে না ।

এমন অনেককেই আমরা দেখেছি ডাক্তারেরা যাদের মৃত্যুর দিন ঘোষণা করে দেন ।

ওই সময় ক্যান্সার শরীর এতটাই ভয়াবহভাবে ছরিয়ে পড়ে যে ডাক্তারদের আর করার কিছু থাকে না ।

ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ?

ছেলে বা মেয়েদের বেস্ট বা স্তনে যে ক্যান্সার হয় তাকে বেস্ট ক্যান্সার বলে ।

ব্রেস্ট ক্যান্সার ছেলেমেয়ে উভয়েরই হতে পারে দেখা গেছে মেয়েদের 99.5 শতাংশ ক্ষেত্রে এবং ছেলেদের 0.5 শতাংশ ক্ষেত্রে ব্রেস্ট ক্যান্সার দেখা যায় । 

শুরুতেই এই রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসা মাধ্যমে এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব ।

কিন্তু যদি শেষ পর্যায়ে চলে যায় তবে এর থেকে নিস্তার পাওয়া অসম্ভব ।

আজকের এই পোস্ট আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে কথা বলব ।

আরো পড়ুন,

ব্রেস্ট ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ

১. ব্রেস্টের মধ্যে গোল গোল চাকার মত পিন্ড বা লাম্ব অনুভূত হওয়া। 

যা ধীরে ধীরে নিজের আকার বড় করতে থাকে । 

এবং এগুলো থেকে কোন প্রকার ব্যথা অনুভূত হয় না ।

২. স্তনের চামড়া কুঁকড়ে যাওয়া,  চামড়ায় দীর্ঘস্থায়ী ঘা হওয়া, চামড়ার টোলপড়া বা চামড়া ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যাওয়া ইত্যাদি।

৩. নিপল বা বোঁটা থেকে তরল পদার্থ যেমন: রক্ত, পুজ ইত্যাদি বের হওয়া ।

৪. নিপল বা বোঁটা এর আশেপাশে কালো অংশে চুলকানি হওয়া বা ফুসকুড়ি উঠা ।

৫  দীর্ঘদিন ধরে স্তনে ব্যথা অনুভূত হওয়া ।

৬. বগল অথবা গলার নিচের অংশে গোল গোল চাকার মত পিন্ড বা লাম্ব অনুভূত হওয়া।

৭. স্তনের আকার এর পরিবর্তন হওয়া ।

৮. স্তনের বোঁটা বা নিপল ভিতরের দিকে ঢুকে যাওয়া ।

বাড়িতে ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্ত করার পদ্ধতি 

সকলেরই উচিত বেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হওয়া । 

বাড়িতে সাধারণ কিছু নিয়ম অবলম্বন করে চাইলেই ব্রেস্ট ক্যান্সার এর লক্ষণ সনাক্ত করা যেতে পারে ।

তারপর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষার মাধ্যমে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় ।

নিচে শনাক্ত করার কিছু পদ্ধতি দেওয়া হল ।

  • স্তনের মধ্যে বা তার আশেপাশে যেমন: বগল এবং গলার নিচের অংশে কোন প্রকার গোল গোল চাকার মত কিছু অনুভূত হয় কী না, তা নিজে নিজে আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখতে হবে। 
  • স্তনের আকারের কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা সেটা দেখতে হবে । 
  • সাধারণত দুটো স্তনের আকার একই রকম হয় না । তাই এইরকম হলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই ।
  • নিপল থেকে কোন প্রকার তরল পদার্থ বের হয় কিনা সেটা লক্ষ করতে হবে ।

এই পরীক্ষা অবশ্যই সম্পূর্ন স্তন জুড়ে করতে হবে । 

খেয়াল রাখতে হবে যেন, স্তনের কোন অংশ বাদ না যায় । 

পরীক্ষা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন, চাপ দিয়ে চামড়া , মাংস এবং বুকের হাড় পর্যন্ত অনুভূত হয় । 

ব্রেস্ট ক্যান্সার নিশ্চিত হওয়ার পদ্ধতি 

বেস্ট ক্যান্সার নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি ডাক্তারি পদ্ধতি রয়েছে ।

এই পদ্ধতি অনুযায়ী বেশ কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে বেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

উপরের উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে কোন লক্ষণ দেখা গেলে,

স্তনের আল্ট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হওয়া যায় । যাকে ম্যামোগ্রাফি বলে ।

আবার বায়োপসি অথবা এফএনএসি (FNAC) করে স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় ।

ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা

বেস্ট ক্যান্সার নিশ্চিত করতে পারলে ডাক্তাররা ক্যান্সার এর ধাপ বুঝে চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ণয় করে থাকেন।  

বেস্ট ক্যান্সার এর চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে রেডিওথেরাপি, কেমথেরাপির মতো ব্যবস্থা ।

আবার অনেক ক্ষেত্রে অস্ত্র পাচার বা অপারেশনের মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা হয় ।

শেষ কথা 

আজকে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানলাম ।

ব্রেস্ট ক্যান্সার শুধুমাত্র নারীদেরই হয় না পুরুষদেরও হয়ে থাকে ।

এবং দিন দিন এই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ছে ।

এই ক্যান্সার প্রতিরোধে আমাদেরকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পড়তে হবে ।

এখানে বলা লক্ষণ গুলো মিলে গেলে যে স্তন ক্যান্সার হয়ে গেছে ।

সেরকম ভাবার কোনো কারণ নেই ।

কিন্তু হতেও পারে ।

তাই উপরে উল্লেখিত লক্ষণ গুলো মিলে গেলে ভয় না পেয়ে একজন ভালো ডাক্তারের সরণাপন্ন হন ।

তিনি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন ।

Leave a Comment