ছাত্রীদের কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখা শরিয়তে কি জায়েজ?

ছাত্রীদের কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখা শরিয়তে কি জায়েজ? দেশের বড় একটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ছাত্রীদের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা চলাকালীন কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখা বাধ্যমূলক করেছে।

 

এ অবস্থানের পক্ষাবলম্বন করতে গিয়ে অনেকে বলেছেন শিক্ষক পিতার মতো- তাদের সামনে মুখ খোলা রাখা দোষের নয়।

 

এ বিষয়ে শরিয়তের আলোকে জানতে চাই। ?

শিক্ষক পিতার মতো- এই যুক্তি দুনিয়ার হাস্যকর যুক্তিগুলোর একটি। শিক্ষক পিতার মতো- সেজন্য তার সামনে পর্দা দেয়ার দরকার নেই, তিনি পিতার নজরে দেখবেন।

 

– এটা আমাদের আকাঙ্খা হতে পারে। তো একি চাহিদা/এক্সপেক্টেশন তো থাকতে পারে অন্যান্য সব পুরুষের কাছ থেকে যে, সব পুরুষরাই নিজের সমবয়সী মেয়েদেরকে বোন মনে করবে এবং নিজের মায়ের বয়সীদেরকে মা মনে করবে।

 

– তাহলে তারা সন্তানের মতো, শিক্ষার্থীরা তাদের ভাইয়ের মতো- এ যুক্তিতে তাদের সাথে আমরা পর্দা না করলে আমাদের অসুবিধা হবে না- এরকমটি আমরা মনে করতে পারি।

ছাত্রীদের কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখা শরিয়তে কি জায়েজ?

কিন্তু আদতে কি সেটি সঠিক? শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অহরহ, ইউনিভার্সিটি লেভেলেও হচ্ছে অহরহ, তাহলে শিক্ষক পিতার মতো- একথা বলে পর্দার যে বিধান আছে সেটিকে এভোয়েড করা- এটা কখনো সঠিক হতে পারে না।

 

পৃথিবীর কোনো আলেম এটাকে জায়েয বলেনি।

 

অতএব, শরিয়তের কোনো বিধানকে লঙ্ঘন করার জন্য নিজেদের খোড়া যুক্তি দিয়ে যদি সেটাকে আমরা লঙ্ঘন করি তাহলে সেটি হবে খুবই দুঃখজনক।

 

এবং মুসলিম প্রধান দেশে মেয়েরা হিজাব-নিকাব পরে পড়াশুনা করতে পারবে না ।

 

এটা মনে হয় জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সবচেয়ে লজ্জাষ্কর অধ্যায়।

 

সামান্য কিছু মানুষের কাছে আমরা সারাদেশের মানুষ বন্দি হয়ে আছি।

 

এ বিষয়ে আমাদের প্রত্যেককে যার যার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করা উচিৎ এবং সোচ্চার হওয়া উচিৎ।

এ ধরণের আইন, এ ধরণের নিয়ম কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে পারে না যে, একজন শিক্ষার্থী হিজাব/নিকাব পরে ক্লাস করতে পারবেন না/পরীক্ষা দিতে পারবেন না।

 

এখানে যেটা বলা হচ্ছে আইডেন্টিটির কথা; আইডেন্টিটি নিশ্চিত করার জন্য খুবই সহজ।

 

একজন মহিলা টিচার/একজন ফিমেল স্টাফ তিনি চেক করে করে ঢুকাবেন- খুবই সহজ।

 

এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টের এই সময়ে যদি আমরা বলি যে মুখ খুলে তারপরে নিশ্চিত করতে হবে যে এই লোক সেই লোক কিনা!-

 

তাহলে এগুলো হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়। সেই সাথে পরীক্ষার হলে কানে কেউ হেডফোন দিয়ে রাখছে কিনা?

ছাত্রীদের কানসহ মুখমন্ডল খোলা রাখা শরিয়তে কি জায়েজ?

– এগুলো চেক করার জন্য নাকি কান খোলা রাখতে হয় ইত্যাদি।

 

দেখুন, নকল করার জন্য শত পথ আমাদের সামনে আমাদের দেশে খোলা আছে আমরা জানি- সেগুলোর ব্যাপারে এতো সিরিয়াস হতে দেখা যায় না ।

 

কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে হিজাব/নিকাবের বিরুদ্ধে যতটা সোচ্চার হতে তাদেরকে দেখা যায়।

 

যদি কোনো শিক্ষার্থীর কান চেক করতে হয়, শরীর চেক করতে হয়, তাহলে সেটা তো ফিমেল স্টাফের মাধ্যমে চেক করা যেতেই পারে।

 

কিন্তু সেজন্য পুরো সময়জুড়ে তাকে চোখ, কান, মুখ কেন খোলা রাখতে হবে?

 

তার আইডেন্টিটি যাচাই করার সময় চেক করে তাকে ঢোকানো যেতে পারে।

এরপর পুরো সময়জুড়ে তাকে মুখ খোলা রাখতেই হবে কেন? এটি রীতিমতো তার ধর্মীয় যে অধিকার আছে/ধর্ম পালনের যে অধিকার আছে-সেটাকে খর্ব করা বলে আমরা মনে করছি।

 

অতএব, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন এবং মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি ।

 

ইসলামী শরিয়তের বিষয়টিকে তারা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত/ফয়সালা নিবেন এবং এ জাতীয় নিয়ম এবং আইন করবেন।

 

Leave a Comment