মজলুম জননেতা নামে খ্যাত মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
তিনি একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে তিনি অবিচ্ছেদ ভাবে যুক্ত আছেন ।
তার সম্পূর্ণ জীবনী এখানে লেখা সম্ভব নয় ।
আমরা এখানে সংক্ষিপ্তভাবে তার জীবন থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করছি ।
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবনী
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী মাওলানা ভাসানী নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন ।
তিনি মজলুম জননেতা বলে খ্যাত ।
তিনি একাধারে আসাম বিধানসভার সদস্য ,পাকিস্তানের সংসদ সদস্য এবং সর্বশেষ বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ছিলেন ।
জন্ম
তার জন্ম ১২ই ডিসেম্বর ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়ায় ।
মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর এই বরেণ্য নেতা মৃত্যুবরণ করেন।
তাকে টাংগাইল জেলার সদর উপজেলার সন্তোষ নামক স্থানে পীর শাহজামান দীঘির পাশে সমাধিস্থ করা হয়।
সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ তার জানাযায় অংশগ্রহণ করে।
আন্দোলন
তার রাজনৈতিক জীবন অনেক বর্ণাঢ্য ।
১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের “আসসালামু আলাইকুম” বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ডাক দিয়েছিলেন।
তিনি তার জীবনে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন তারপরও কিছু আন্দোলনের হলো:
- খিলাফত আন্দোলন
- অসহযোগ আন্দোলন
- বাংলা ভাষা আন্দোলন
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
- ফারাক্কা লংমার্চ
ভাসানী নামকরন
১৯২৬ সালে তিনি তার স্ত্রী আলেমা খাতুনকে নিয়ে আসাম যান ।
আসামে তিনি প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলন শুরু করেন ।
তিনি ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসান চরে প্রথম কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেন।
এখান থেকে তার নাম রাখা হয় “ভাসানীর মাওলানা”।
এরপর থেকে তার নামের শেষে ভাসানী শব্দ যুক্ত হয়।
এছাড়াও তিনি রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই মাওপন্থী কম্যুনিস্ট বা বামধারার রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
এজন্য তার অনেক অনুসারীরা তাকে রেড মওলানা নামেও ডাকতেন ।
কাজ
তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ।
এবং তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি নির্বাচিত হন ।
পরে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে আরেকটি রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন ।
যা ন্যাপ নামে পরিচিত ।
তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন এবং সংগ্রাম করেছেন ।
তিনি মজলুম মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সব ধরনের চেষ্টাই করে গেছেন ।
এছাড়া তিনি সমাজ সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।
তিনি বিভিন্ন স্কুল,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন ।
তিনি আসামেও বেশ কিছু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ।
সম্মাননা
২০০২ সালে ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে ।
তিনি ২০০৪ সালে বিবিসি জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি তালিকায় ৮ম নির্বাচিত হন।
এছাড়াও তিনি ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আমরা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবনী সম্পর্কে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানলাম ।
এগুলো সব তথ্যই wikipedia থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ।
এখানে সংক্ষিপ্তভাবে তার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলা হয়েছে ।
তার রাজনৈতিক জীবন অনেক ব্যাপক ।
এবং তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গেছেন ।
আমাদের সকলের উচিত তাকে শ্রদ্ধা এবং সম্মানের সাথে স্মরণ করা ।
এরকম আরো আর্টিকেলের জন্য আমাদের এই ব্লগটি ঘুরে দেখতে পারেন ।