Monkeypox রোগ এর উৎপত্তি ও বিস্তার

এখন আমরা খুবই বাজে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।প্রতি নিয়তই একটা করে নতুন ভাইরাস জনিত রোগ বিস্তার লাভ করছে।Monkeypox তেমনি একটা।আজকে আমি Monkeypox এর উৎপত্তি ,আশ্রয়, বিস্তার, বিস্তারের কারন এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করব ।আর বাজে কথা না বলে , চলুন শুরু করি।

Monkeypox কী?

Monkeypox একটা ভাইরাস জনিত রোগ, যা Monkeypox ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। এর নাম Monkeypox কারণ সবার প্রথমে এই ভাইরাস বাদুড়ের শরীরে চিহ্নিত করা হয় ।তবে বাদুর ছাড়াও মানুষ সহ আরও অনেক প্রাণীর মধ্যে এই রোগ শনাক্ত করা হয়েছে।এই রোগ আফ্রিকা থেকে বিশ্বের অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।অনেক দিন আগে এই রোগ বিপুল পরিমাণে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।তারপর অনেকদিন ধামাচাপা পরে ছিল।আবার এই রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পরতে দেখা যাচ্ছে ।

Cover your mouth and nose

আরও পড়ুন,

রংপুরের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম ,ফোন নম্বর এবং চেম্বারের ঠিকানা

উৎপত্তি

১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরের একটা ল্যাবরোটরীতে একটা বাঁদরের শরীরে প্রথম এই রোগ শনাক্ত করা হয়।যদিও বাঁদরের শরীরে এই ভাইরাস স্থায়ীভাবে বসবাস করে না।মানুষের মধ্যে প্রথম শনাক্ত করা হয় ১৯৭০ সালে।কঙ্গোর ইকুয়েডর প্রদেশের বাসনকুসু শহরে ।১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৩৮ জনের শরীরে Monkeypox সনাক্ত করা হয়।যার মধ্যে প্রায় ৩৩ জন মারা যায়।তারপর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত প্রায় ৫১১ জনের শরীরে Monkeypox শনাক্ত করা হয়।এর পর পশ্চিম আফ্রিকাতে এই রোগের সংক্রমণ দেখা যায়। এরপর ২০২২ সালে অর্থাৎ চলতি বছরে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে Monkeypox দেখা যাচ্ছে। এগুলো ছাড়াও ২০০৩,২০১৮,২০২১ সহ অনেক সময় অনেক জায়গায় এই রোগ শনাক্ত করা হয়েছ।

বিস্তারের কারন

মানুষের মধ্যে Monkeypox অন্য প্রাণীর থেকে এসেছে এইটা নিশ্চিত। আক্রান্ত প্রাণীকে ভক্ষণ করার ফলে, আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মধ্যমে অথবা আক্রান্ত প্রাণীর দেহের যেকোন প্রকার তরল পদর্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে। একই বিছানা বা একই রুম ব্যবহারের ফলে, আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের তরল পদর্থের মাধ্যমে অথবা একই টলেট্রিজ বা একই পাত্র ব্যবহারের ফলে মানুষ থেকে মানুষে এই রোগ ছড়াতে পারে ।

Monkeypox lessons

আরও পড়ুন,

মোবাইলে চিকিৎসা নেওয়ার সেরা ৪ টি অ্যাপ

Monkeypox ভাইরাসের আশ্রয়

বাদুর ছাড়াও গাম্বিয়ান ইদুর,আফ্রিকান কাঠবিড়ালি সহ অন্যান্য প্রাণীতে দেখা গেছে। যদিও এখনো নির্দিষ্টভাবে Monkeypox ভাইরাসের আশ্রয় খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আক্রান্তের লক্ষণ

Monkeypox এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, দুর্বলতা বোধ দিয়ে। যদিও প্রাথমিক ভাবে এই রোগকে বসন্ত ও হামের সাথে সদৃশ মনে হলেও ফুসকুড়ির মাধ্যমে এদের আলাদা করা যায়। কান ও ঘাড়ের আশপাশ দিয়ে এই ফুসকুড়ি উঠতে শুরু করে। তারপর মুখ মণ্ডল ও হাত – পা তে ছড়িয়ে পড়ে।করোকারো চোখের মধ্যেও এই ফুসকুড়ি দেখা যায়।এই ফুসকুড়ি একটা ছোট দাগের মাধ্যমে উঠতে শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে ফুলে উঠে এবং সাদা রসের মাধ্যমে পূর্ণ হয় ।কিছুদিন পর এই সাদা রস হলুদ রংয়ে রূপান্তরিত হয়। এই ফুসকুড়ির সংখ্যা কয়েকটি থাকে কয়েক হাজারও হতে পারে। এই অবস্থা একজন রোগীর ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে ।

রোগ নির্ণয়

এই রোগ নির্নয়ের সময় ফুসকুড়ি জাতীয় রোগ, গুটি বসন্ত, জল বসন্ত, ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন মাথায় রাখতে হয়। ফুসকুড়ির রসের পলিমার চেইন বিক্রিয়ার মাধ্যমে এই রোগ নির্নয় করতে হয়। কারণ এই ভাইরাস রক্তে বেশিক্ষণ অবস্থান করে না। পূর্ণাঙ্গ ফলাফলের জন্য প্রথম জ্বর হওয়ায় সময়, ফুসকুড়ি হওয়ার সময়, ফুসকুড়ির রস, ফুসকুড়ির বর্তমান অবস্থা এবং রোগীর বয়স প্রয়োজন হয়।

Monkeypox এ আক্রান্তদের মৃত্যুহার

এই রোগের মৃত্যুহার খুবই কম সর্বোচ্চ ১০% এবং সর্বনিম্ন ১% এরও কম।

কোন কোন দেশে ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে

অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, স্পেন, পর্তুগাল, ইউকে, বেলজিয়াম সহ এই পর্যন্ত প্রায় ১২ টি দেশে Monkeypox দেখা গেছে।

Monkeypox থেকে বাঁচতে করণীয়

Monkeypox হাঁচি – কাশির মাধ্যমে কম ছড়ায়। সবচেয়ে বেশি ছড়ায় আক্রান্ত প্রাণীর কামড়, আঁচড় ও দেহের তরল পদার্থের মাধ্যমে।

তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই রুম, টয়লেট্রিজ, পাত্র, বিছানা ব্যবহার না করা। বন্য প্রাণী থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা, আক্রান্ত প্রাণীর মাংস না খাওয়া। 

Conclusion

প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ভাইরাস জনিত রোগের সংক্রমণ আমরা দেখতে পাচ্ছি। তাই মাস্ক পরা আবশ্যিক না হলেও আমাদের বাড়ির বাহিরে গেলে মাস্ক পরা, সর্বদা পরিস্কার থাকা, বাহির থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত। মূলকথা আমাদের উচিত সাস্থ্যবিধি মেনে চলা । এবং সর্বদা সুরক্ষিত থাকা।

Leave a Comment