ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস | Islami bank DPS

ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস | Islami bank DPS

আমার সর্বদাই ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চয় করার চিন্তা করে থাকি ।

কিন্তু কিভাবে এবং কোথায় এই টাকা সঞ্চয় করব এই নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন থেকেই যায় ।

এক্ষেত্রে আমাদের দেশীয় ব্যাংকগুলোর ডিপিএস ব্যবস্থা আমাদেরকে আশ্বস্ত করে ।

ব্যাংকে ডিপিএস করে প্রতি মাসে টাকা জমানো হয় মেয়াদ শেষে ওই অল্প অল্প করে জমানো টাকার একটা বড় অঙ্কের টাকা হিসেবে আমরা হাতে পাই ।

সাথে সাথে কিছু প্রফিটও পাওয়া যায় ।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা দিয়ে থাকে ।

আরো পড়ুন, রূপালী ব্যাংক ডিপিএস

আজকে আমরা ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস স্কিম সম্পর্কে জানব ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন কাজের জন্য টাকা সঞ্চয়ের জন্য বিভিন্ন রকম ডিপিএস ডিপিএস স্কিম রয়েছে ।

আজকে আমরা সেগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো ।

ইসলামী ব্যাংক এর ডিপিএস পরিচিতি

ইসলামী ব্যাংকে ডিপিএস করে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কিস্তি দিতে হবে।

যা ওই ডিপিএস অ্যাকাউন্টের মেয়াদ যতদিন ততদিন দিতে হবে ।

ইসলামী ব্যাংকে শরীয়াহ বোর্ড থাকায় এখানে সুদ নিয়ে তেমন একটা সমস্যা হয় না।

আমরা এখানে শুধু ইসলামী ব্যাংক এর ডিপিএস সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তাদের লাভের পরিমাণ , মেয়াদ, কি কি কাগজপত্র লাগবে এসব নিয়ে আলোচনা করব ।

সময়ের সাথে সাথে এগুলো পরিবর্তন হতে পারে আমরা এখানে শুধুমাত্র ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

একদম সঠিক তথ্যের জন্য এবং যেকোনো একটি ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনার নিকটস্থ যেকোনো ইসলামী ব্যাংকের শাখা ,উপ-শাখা অথবা এজেন্ট আউটলেটে যোগাযোগ করুন।

ইসলামী ব্যাংক এর ডিপিএস স্কিম সমূহ

তাহলে এবার আসুন জেনে নেই ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস স্কিম সমূহ অর্থাৎ কোন কোন কাজের জন্য ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস অ্যাকাউন্ট রয়েছে ।

সাথে সাথে তাদের সম্পর্কে কিছু তথ্য ।

এসব অ্যাকাউন্টের সাথে মাঝে মাঝে টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় ।

আবার অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ট্যাক্স কাটা হয় ।

টিন সার্টিফিকেট না থাকলে লাভের উপর থেকে ১৫% সরকারি ট্যাক্স এবং তিন সার্টিফিকেট থাকলে দশ শতাংশ ট্যাক্স কাটা হয়ে থাকে ।

এগুলো সম্পর্কে আপনি ব্যাংকে গেলে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

মুদারাবা স্পেশাল সেভিংস অ্যাকাউন্ট

প্রতি মাসে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ 20 হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক কিস্তির মাধ্যমে এই ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলা যায় ।

যা তিন বছর , পাঁচ বছর এবং ৮ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে ।

তিন বছর মেয়াদের জন্য লাভ ৬ শতাংশ ৫ বছর মেয়াদের জন্য ৬.৫ শতাংশ এবং দশ বছর মেয়াদের জন্য লাভ ৭ শতাংশ হয়।

আরো পড়ুন, মোবাইল ব্যাংকিং কী ? বাংলাদেশের ১০ টি Mobile Banking অপারেটর

মুদারাবা মোহর সেভিংস অ্যাকাউন্ট

ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী বিয়েতে স্বামীকে তার স্ত্রীর জন্য মোহর প্রদান করতে হয় ।

যা অনেক বড় অংকের টাকা হয়ে থাকে।

 তাই বিয়ের জন্য বিয়ের মোহরের জন্য টাকা সঞ্চয় করতে ইসলামী ব্যাংকে এই ডিপিএস স্কিম।

এখানে সর্বনিম্ন মাসে কিস্তি ৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত হয়। 

যা পাঁচ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদী হয়। 

পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য লাভ দেওয়া হয় ৫.৭% এবং ১০ বছর মেয়াদে ৬. ৫% লাভ দেওয়া হয়।

মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট

এখানে সর্বনিম্ন এক লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ যেকোনো টাকা পর্যন্ত রাখা যায় ।

যা তিন বছর এবং পাঁচ বছর মেয়াদী হয় ।

এখানে লাভের হার ৩ বছর মেয়াদের জন্য ৭ শতাংশ ।

এবং ৫ বছর মেয়াদের জন্য ৭.৫ শতাংশ হয়ে থাকে।

মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট

যে কোন ব্যক্তি এই ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন ।

এখানে জমা করার জন্য সর্বনিম্ন টাকা পরিমাণ হলো 1000 টাকা ।

যা তিন মাস থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদী হয়ে থাকে ।

এই ডিপিএসের লাভের হার তিন এবং ছয় মাসের জন্য 5.5% । 

এক বছরের জন্য ৫.৬ শতাংশ ।

দুই বছরের জন্য ৫.৮% এবং তিন বছরের জন্য ৬% শতাংশ হয়ে থাকে ।

মুদারাবা সেভিংস বন্ড অ্যাকাউন্ট

কোন ব্যক্তি বা যে কোন প্রতিষ্ঠান এই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এই অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ডিপোজিট করা যাবে।

মেডিস অ্যাকাউন্টটি পাঁচ বছর এবং ৮ বছরের জন্য খোলা যাবে ।

৫ বছরের জন্য লাভ ৫.৭৫ শতাংশ এবং আট বছরের জন্য ৬ শতাংশ।

মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড অ্যাকাউন্ট

এই অ্যাকাউন্ট প্রবাসী বাংলাদেশের রাও পড়তে পারবেন এছাড়াও তাদের কোন আত্মীয় বা নাবালক সন্তানের নামেও করতে পারবেন।

এই অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করা যাবে ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ।

যা পাঁচ বছর এবং 10 বছর মেয়াদী হবে

পাঁচ বছরের জন্য লাভ ৫.৮ শতাংশ এবং দশ বছরের জন্য লাভ ৬.৬ শতাংশ ।

মুদারাবা হজ সেভিংস অ্যাকাউন্ট

হজ্ব মুসলমানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ।

যাদের সামর্থ্য আছে তাদের জন্য হজ করার আবশ্যক ।

বাংলাদেশ থেকে হজ করতে যাওয়ার জন্য অনেক টাকা পয়সা লাগে ।

যা অনেক সময় একত্র থাকে না ।

তাই ইসলামী ব্যাংক , যারা হজ্ব করতে চান তাদের জন্য এই ডিপিএস স্কিম নিয়ে এসেছে।

এই ডিপিএস দিয়ে এক বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত মেয়াদে করা যায় ।

এক্ষেত্রে ডিপিএস এর লাভ ৭% হয়ে থাকে।

ওয়াকফ ক্যাশ ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট 

এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা ডিপোজিট করে এই অ্যাকাউন্ট করা যাবে ।

যে কেউই এরকম করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে ডিপিএস লাভ ৭ শতাংশ হয়।

ডিপিএস একাউন্ট খোলার যোগ্যতা

  • ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যে সকল যোগ্যতা থাকতে হবে তা হল,
  •  অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে
  •  ১৮ বছর বয়স হবে ।
  • এছাড়াও 18 বছরের কম বয়সীরা চাইলে তাদের অভিভাবকের সাহায্যে ডিপিএস করতে পারবেন ।

ডিপিএস খুলতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 

  • জাতীয় পরিচয় পত্র / ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট এর যে কোনো একটির কপি ।
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটো কপি।
  • অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে জন্ম সনদ। অভিভাবকের NID এর ফটো কপি এবং অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।

কিভাবে ইসলামী ব্যাংক এর ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে

ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের শাখা, উপ-শাখা অথবা এজেন্ট আউটলেটে গিয়ে আপনি যে ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান সেটা সম্পর্কে বলবেন ।

কতটাকা মাসিক কিস্তি, কত দিন মেয়াদ, কী জন্য খুলতে চান এগুলো বলবেন ।

তারা আপনাকে অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফর্ম দেবে ।

সাথে কিছু কাগজপত্র এবং ছবি চাইবে। 

উক্ত ফরম পূরণ করে ছবি এবং অন্যান্য কাগজপত্র সহকারে জমা দিবেন ।

তাহলে তারা আপনার একাউন্ট খুলে দিবে এবং উক্ত কর্মকর্তার থেকে বাকি তথ্য জেনে নেবেন ।

আরো পড়ুন, ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি

সুবিধা 

  • যেকোনো বাংলাদেশী নাগরিক এই একাউন্ট করতে পারবেন।
  • কোন কারনে যদি ডিপিএস ভেঙে ফেলার প্রয়োজন হয় তাহলে তা সহজেই করা যাবে।
  • যে শাখায় আপনি ডিপিএস করেছেন সেখানে যদি সেভিংস একাউন্ট থাকে । তাহলে সেভিংস একাউন্ট থেকে সহজেই অটোমেটিক ভাবে মাসিক কিস্তি দেওয়া যাবে।
  • ইসলামী ব্যাংকে শরীয়াহ বোর্ড থাকায়। সুদ নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না।

আমার শেষ কথা 

ইসলামী ব্যাংকের ডিপিএস স্কিম সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করেছি ।

আশা করি আপনি উপকৃত হবেন ।

কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন ।

আমাদের এই পোস্টটি ভাল লাগলে ব্লগের অন্যান্য পোস্টগুলো করে দেখতে পারেন ।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন

ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস মুনাফার হার

মুনাফার হার সাধারণত আপনি কোন ধরনের ডিপিএস ,কতদিন মেয়াদে তার উপর নির্ভর করে । তবে সাধারণত মুনাফার হার ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ হয়ে থাকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *