নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর?

নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর? নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গার জন্য দেশের প্রথম শ্রেনির একটি সংবাদপত্র আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

ঋতুচক্র নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা, প্যাড নিঃসংকোচে কিনতে পারা এসব নিয়ে প্রায় এক শ্রেনির মানুষ আওয়াজ তোলেন। আসলেই কি এসব ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর? ?

 

ট্যাবু ভাঙ্গার নাম করে এই যে মেয়েদের ঋতু নিয়ে এক ধরণের জড়তা আছে সেটাকে ভেঙ্গে দেয়ার যে প্রচেষ্টা সেটি আমরা মনে করছি যে খুবই ভয়াবহ একটা প্রচেষ্টা, এটি কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না কোনো ক্ষতি ছাড়া।

 

সবকিছুকেই প্রকাশ করে ফেলতে হবে এবং সবকিছুতেই মানুষের জড়তা ভেঙ্গে ফেলতে হবে- এর কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।

 

নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর?

আমরা যারা ট্যাবু ভাঙ্গার কথা বলছি বা যাদেরকে এটা বলতে শুনছি।

 

তারা একটা যুক্তি অনেকে দিয়ে থাকেন যে, ‍ঋতু না হলে আপনার/আমার জন্ম হতো না; তাহলে সেটাকে এতো লুকোচুরি করার কি আছে?

 

বা করা উচিৎ কিনা আদৌ?- এরকম খোলা যুক্তি অনেকে দিচ্ছেন।

 

আমরা যদি একই যুক্তিতে বলি যে, মলমূত্র ত্যাগ- যেটা না হলে আমরা সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারতাম না।

 

আমরা অসুস্থ হয়ে যেতাম, আমরা বাঁচতামই না আদৌ; তো মলমূত্রকে এতো লুকাবার কি আছে! বা এটাকে এতো হাইড করার কি আছে!

 

এতো গোপন করার কি আছে! এবং সে জায়গাগুলোকে ঢাকবারই বা কি আছে! পশু/পাখি/জীবজন্তুর মতো তো উন্মুক্ত করেই আমরা চলতে পারি!

 

– এ যুক্তিটা কেমন হবে? ঠিক একইভাবে কিভাবে ট্যাবু ভাঙ্গার নামে ঋতুচক্র নিয়ে যে জড়তা আছে সেটিকে ভেঙ্গে দেয়া- এটা কখনো যৌক্তিক হতে পারে না।

 

মানুষের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূরণ ভূষণ হলো লাজুকতা/লজ্জাশীলতা। এই লজ্জাশীলতাকে ভেঙ্গে ফেলার মধ্যে তেমন কল্যাণ নেই।

 

নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর?

নারীদের এ জাতীয় অসুস্থতার কারণে, এ জাতীয় পরিস্থিতিতে তাদেরকে দোকান থেকে যে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হয়।

 

যেগুলো আলাপ-সালাপ করতে হয়- সেগুলো তারা প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে করতে পারছেন ।

 

এটার কারণে বড় কোনো বিপদ হয়ে যাচ্ছে/সমস্যা হয়ে যাচ্ছে-ব্যাপরটি সেরকম নয়।

 

বহু লজ্জাশীলতার অভাব আমরা আমাদের সমাজে দেখতে পারছি। সেগুলো নিয়ে বরং আমাদের মাথাব্যাথা করা উচিৎ।

 

আমাদের মধ্যে যে বড়দের প্রতি একটা রেসপেক্টের জায়গা থেকে জড়তা থাকার কথা- যেটা মানুষের একটা সৌন্দর্য, তরুণদের একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য এবং চারিত্রিক মাধুর্যের ব্যাপার।

 

সেটা কিন্তু আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এবং সেটা নিয়ে আমাদের তেমন কোনো মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে।

 

অথচ সেটাকে আমাদের চিন্তা করা উচিৎ এবং সেটা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিৎ।

 

নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গা কল্যাণকর?

যাই হোক, নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গার নাম করে যে জড়তা দূর করে ফেলা হচ্ছে এটা থেকে আমাদের কল্যাণের কোনো দিক নেই এবং পশ্চিমা দুনিয়া এ ধরণের অনেক তথাকথিত ট্যাবু ভেঙ্গেছে।

 

কিন্তু তাদের তরুণদের আদর্শিক জায়গা বিশেষ করে তাদের চরিত্রের যে অধঃপতন এবং আরো যে সমস্ত দিকগুলোতে তারা আমাদের দিক থেকে পিছিয়ে আছে সেটির অন্যতম প্রধান কারণ কিন্তু এগুলো।

 

অতএব সবকিছুতে পশ্চিমা দুনিয়ার অনুসরণ করার অন্ধ অনুকরণের যে প্রবণতা আছে আমাদের দেশের এক শ্রেনির মানুষের মধ্যে সেটি আমাদের দেশেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।

 

আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে কল্যাণের মধ্যে পরিচালিত হওয়ার তৌফিক দান করুক।

Leave a Comment