আমরা অনলাইনে দিনের প্রচুর সময় ব্যায় করি।এই সময়টা আমরা কাজে লাগালে অনেক কিছু শিখতে ও একটু চেষ্টা করলে ভালো পরিমাণে টাকাও ইনকাম করতে পারি।অনেকে অনলাইনে সময় নষ্ট না করে। অনলাইনে টাকা ইনকাম করার চেষ্টা করে।যেমন, আপনি একজন।
কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে অনেকে তা করতে পারে না। তাই আমি এই পোষ্টে 2022 সালে অনলাইনে ইনকাম করার সেরা উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আপনার প্রতিটি করতে হবে এমনটা না। নিচের টপিক লিস্ট থেকে আপনার ইচ্ছামত বিষয়ে চলে যেতে পারেন ।তবে পুরাটাই পড়ে আপনার পছন্দ মতো যেকোনো একটা শুরু করতে পারেন। আর বাজে না বলে চলুন শুরু করি।
কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়
দেখুন অনেক ভাবেই অনলাইনে ইনকাম করা যায়। এই ইনকাম হতে পরে সৎ পথে, হতে পারে অসৎ পথে, হতে পারে মানুষকে ঠকিয়ে। এখানেও হালাল – হারামের ব্যাপার রয়েছে। আর কেউই চাইনা অসৎ পথে হারাম টাকা ইনকাম করতে ।বাস্তব দুনিয়ায় সৎ পথে ইনকাম করতে যেমন কষ্ট করতে হয় । এখানেও তেমনি ।অনেক ইনকাম পদ্ধতি আছে যেখানে আপনাকে কাজ শিখে তারপর ইনকাম করতে হবে। আবার কিছু আছে যেগুলো করতে তেমন কোন স্কিল লাগে না,তবে কাজ করতে করতেই অনেক কিছু শেখা যায়। আমি সেগুলো নিয়েই কথা বলব। আবার অনেক ইনকাম এর পদ্ধতি আছে যেগুলোতে কোন স্কিল লাগে না । আমি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব না। আর কাউকে এগুলো করার পরামর্শও দিব না।
অনলাইনে টাকা ইনকাম মোটা দাগে দুই প্রকার,
১. অ্যাক্টিভ ইনকাম ।
২. প্যাসিভ ইনকাম ।
নিচে অ্যাক্টিভ ও প্যাসিভ ইনকাম নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে ।
অ্যাক্টিভ ইনকাম
অ্যাক্টিভ ইনকাম হলো আপনি কাজ করলে টাকা পাবেন। আর কাজ না করলে টাকা পাবেন না।এটাকে ব্যবসা বা চাকরির মতো চিন্তা করতে পারেন। যেখানে আপনি কাজ করলেই টাকা পান। না করলে পান না। অ্যাক্টিভ ইনকাম করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে । নিচে e ব্যাপারে আলোচনা করা হলো।এরপর আমরা প্যাসিভ ইনকাম নিয়ে আলোচনা করব।
প্যাসিভ ইনকাম
মনে করেন আপনি ছুটিতে আছেন বা ঘুমাচ্ছেন। আবার একই সাথে আপনি টাকা ইনকাম করছেন। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যম এইকাজ সহজেই করতে পারবেন। আপনি একবার কাজ করবেন। আর তারপর আপনি সেই কাজের টাকা পেতেই থাকবেন। এটাই প্যাসিভ ইনকাম। আমি আপনাকে প্যাসিভ অনলাইন ইনকামের দিকে যেতে বলব। অ্যাক্টিভ ইনকামের চেয়ে।প্যাসিভ ইনকাম করার কিছু পদ্ধতি নিয়ে নিচে আলোচনা করছি।
অনলাইন ব্যাবসা
অনলাইনে ব্যাবসা এখন অনলাইনে ইনকাম করার সাধারন ব্যাপার হয়ে গেছে।এতটাই সাথারণ ব্যাপার যে ,আজকাল তান্ত্রিক – কবিরাজরা পর্যন্ত ফেসবুকে তাদের আশ্রম খুলে বসেছে। আগে অনলাইনে ব্যাবসা করতে গেলে একটা ওয়েবসাইট প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখন বিনা মূল্যে ফেসবুক পেজ খুলে সহজেই ব্যাবসা শুরু করা যায়।
ব্যাবসা শুরু করার জন্য খুব ফ্যান্সি প্রডাক্ট প্রয়োজন নেই। আপনার হাতের কাছের যে কোন জিনিস যেমন, আপনার এলাকার বিখ্যাত কোন খাবার বা ফল দিয়েও ব্যাবসা করতে পারেন। আমি নিজেও একজন আপুকে তাদের বাড়ির লটকন ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করতে দেখেছি ।
ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা এখন খুবই জনপ্রিয়। অনেকে পড়ালেখা বা কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করছে। ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্তভাবে ইনকাম করা । আপনি কোন অফিস বা ব্যবসার সাথে যুক্ত না হয়ে ইচ্ছা মত কাজ করবেন। বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে কাজ পাওয়া যায়। যেমন: ফ্রিল্যান্সার , আপওয়ার্ক, ফাইবার ইত্যাদি। এখানে আপনার সময়মতো কাজ করে দিয়ে টাকা নিয়ে নিবেন। অনেক তো কাজ কাজ করছি । এখানে কোন ধরনের কাজ করা যায় এই কথাটি মনে আসছে তাইনা । ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে প্রথমে আপনার কোন একটা কাজে স্কিল বা দক্ষতা থাকতে হবে ।যেই স্কিল ব্যবহার করে আপনি কাজ করবেন।তাহলে কোন কোন স্কিল প্রয়োজন?? প্রথমেই আপনাকে ভালো ইংলিশ জানতে হবে, কমিউনিকেশন স্কিল থাকতে হবে ইত্যাদি সফট স্কিল থাকতে হবে। তারপর নির্দিষ্ট কাজের স্কিল থাকতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ যেসব কাজ পাওয়া যায় তার কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো ।এছাড়াও এগুলো স্কিল ব্যবহার করে আপনি ফুলটাইম চাকরিও করতে পারবেন। একবার কোনটাতে এক্সপার্ট হবে পারলে আপনার যেটা খুশি আপনি সেটাই করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং
বাস্তব জীবনে অনেক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায় বিক্রি বাড়ানোর জন্য যেমন মার্কেটিং করে। ঠিক তেমনি অনলাইনে ব্যবসার মার্কেটিং করাকে বলে ডিজিটাল মার্কেটিং ।এটি অনলাইনে ইনকাম করার একটু কঠিন পদ্ধতি।
ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং একটা খুবই জনপ্রিয় সেক্টর। একজন ডিজিটাল ডিজিটাল মার্কেটার এর চাহিদা অনেক।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে যেসব কাজ পাওয়া যায়।তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গুলোর একটা হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন । একজন ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনার মাসে হাজার ডলারের উপরে ইনকাম করতে পারে। লোগো , টি + শার্ট , বিজনেস কার্ড, ব্যানার আরও অনেক রকমের কাজ রয়েছে এই গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য একটু শক্তিশালী কম্পিউটার প্রয়োজন। যেকোন একটা বিষয় শিখে কাজ শুরু করে দেওয়া যায়। তারপর ধীরে ধীরে অন্যান্য গুলো শিখে কাজ করা যায়। ইউটিউবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর বাংলায় অনেক টিউটরিয়াল আছে। ভালোমত একটা চ্যানেল থেকে শেখা শুরু করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইননের মাধ্যমে আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।একটা গ্রাফিক্স প্রডাক্ট একজনের কাছে বিক্রি না করে ।অনেক মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারেন।এভাবেই প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।থিম ফরেস্ট সহ অনেক সাইটে বিক্রি করা যায়।অনলাইনে একটু ঘাটাঘাটি করলেই পেয়ে যাবেন।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যাবসা বা যেকোন সংগঠনের একটা ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক। আর এই ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়ে আপনিও মাসে হাজার খানেক ডলার পকেটে ঢুকাতে পারেন । ওয়েব সাইট তৈরীর জন্য প্রগ্রামিং শিখতে হয় এটা ঠিক কথা। কিন্তু খুব বেশি প্রগ্রামিং না শিখেও আপনি সুন্দর সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন WordPress ব্যবহার করে। একজন ভালো ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপারদের অনেক দাম। কয়েক মাস এর পিছনে লেগে থাকলে আপনি ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারেন।ওয়েব সাইট ডিজাইন ও ডেভপমেন্ট এর মাধ্যমে আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। একটা টেম্পলেট , ওয়ার্ডপ্রস থিম বা প্লাগিন ইত্যাদি বিভিন্ন সাইটে বিক্রি করা যায়। এভাবে বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।
আরও পড়ুন,
অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস অ্যাপ ডেভপমেন্ট
আমাদের ফোনে প্রচুর অ্যাপ ইনস্টল করা আছে । আর এইসব অ্যাপ তৈরি করতে পারে এমন মানুষের চাহিদা অনেক। একজন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপার মাসে যে কী পরিমাণ আয় করে তার কোন ইয়ত্তা নেই। তবে এইটা একটু কঠিন কাজ। শিখতে অনেক সময় লাগে। অনেকদিন এর পিছনে লেগে থাকতে হয়। এছাড়াও একটা অ্যাপ করে জনপ্রিয় করতে পারলে ।ওই অ্যাপ এর মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।
কনটেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম
কন্টেন্ট রাইটিং মোটামুটি সহজ এবং ভালো লেখকের চাহিদা অনেক। আপনি এইযে ব্লগ পোস্টটি পড়ছেন এটাও এক প্রকার কন্টেন্ট রাইটিং। বিভিন্ন ব্লগ, নিউজ পোর্টাল ইত্যাদিতে লিখে আপনি আয় করতে পারেন। প্রতিটি আর্টিকেলের জন্য ৫ থেকে ৫০০ পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। লেখার অন্যকোন জায়গা না পেলে আপনি আমার এই ব্লগে লিখতে পারেন ।যেকোন বিষয়ের উপর সর্বনিম্ন ৬০০ ওয়ার্ডের ব্লগপোস্ট লিখে Contact Us পেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন অথবা মেইল করুন [email protected] ।
আবার নিজে একটা ব্লগ খুলে লেখালেখি করে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।জা প্যাসিভ ইনকাম মধ্যে পড়ে।
ডেটাএন্ট্রি
এইটা অনলাইনে ইনকাম করার অনেক সহজ পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের ডেটাকে সাজিয়ে গুছিয়ে বা রিসার্চ করে একটা ফাইলে লিখে দিতে হয় । এইটুকুই কাজ। তবে কাজ যেহেতু সহজ তাই ইনকাম তুলনামূলক কম। তাই আমি এই কাজটা করতে উৎসাহ দিবনা। যদি আপনার টাকার খুব প্রয়োজন পরে এবং খুবই দ্রুত প্রয়োজন তাহলে আপনি এইকাজ করতে পারেন। তা না হলে আমি বলব আপনি অন্য কিছু দেখুন।
SEO
SEO হলো Search Engine Optimization । এক কথায় কোন ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চে রেজাল্টের উপরের পাতায় এনে দেয়া। একজন ভালো SEO এক্সপার্টের চাহিদা অনেক। অনেক ভালো ইনকাম করতে পারবেন যদি একজন SEO এক্সপার্টে হতে পারেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে অনলাইনে ইনকাম
বাস্তব জীবনে যেমন মানুষ কাজে সাহায্যের জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখে।তেমনি অনলাইনে কাজে সাহায্যের জন্য অনেকে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
রাখে।অনলাইনে ইনকাম করার সহজ কাজ গুলোর মধ্যে এটা একটা। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে হলে আপনাকে প্রথমে ভালোভাবে ইংরেজী জানতে হবে। ফ্রিল্যান্স মার্কটপ্লেসগুলোতে এ বিষয়ে ভালো কাজ পাওয়া যায় ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে ইনকাম
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কোন একটা ওয়েবসইট বা ই – কমার্স সাইটে পন্য কিনতে কাউকে রেফর করা। আর আপনার রেফার থেকে একই পন্যটি কিনলে আপনি একটা কমিশন পাবেন।
আপনার যদি একটা ব্লগ , ইউটিউব চ্যানেল , ফেসবুক পেজ বা কোন স্যোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় উপস্থিতি থাকে তবে আপনিও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমেও অনেক টাকা ইনকাম করা যায় ।
ডিজিটাল পন্য বিক্রি
আপনার যদি একটা ব্লগ , ইউটিউব চ্যানেল , ফেসবুক পেজ বা কোন স্যোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় উপস্থিতি থাকে তবে একটা ডিজিটাল পন্য যেমন: কোন সটওয়্যার, ই – বুক , অনলাইনে কোর্স, SAAS টুল বিক্রি প্রভৃতি বিক্রির মাধ্যম আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
আরও পড়ুন,
অনলাইনে কোর্স বিক্রি
MooP বা massive online open courses খুবই জনপ্রিয়। আপনাকে যদি কোন বিষয়ে দক্ষ্তা থাকে। তবে আপনি সেই বিষয়ের উপর কোর্স বানিয়ে তা বিক্রি করতে পারবেন। এটা প্যাসিভ ইনকাম করার অনেক বড় সুযোগ। উদাহরন দিতে গেলে টেন মিনিট স্কুল, উদ্ভাস – উন্মেষ, বিবিসি জলানা, ঘুড়ি লার্নিং ইত্যাদি কথা বলতে হয়। আপনারা নিশ্চয়ই এসব সাইটের কোর্স করেছেন বা কোর্স সম্পর্কে জানেন।
ক্রিপ্ট কারেন্সিতে ইনভেস্ট
অনলাইন ইনকাম করার একটা ঝুঁকি পূর্ন পদ্ধতি এটি। স্টক মার্কেটে ইনভেস্ট মতো ক্রিপ্ট তে ইনভেস্ট করে ভালো ইনকাম করা যায়। তবে এই ব্যাপারে অনেক পড়াশোনা করতে হয়। কোন ক্রিপ্ট কারেন্সি বা Nft এর দাম কখন কেমন হয় তা বলা যায় না।
ও হ্যাঁ, বাংলাদেশে ক্রিপ্ট অবৈধ। তাই বাংলাদেশিদের এপথে জা যাওয়াই ভালো
ফটোগ্রাফি
ছবি তুলে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। যদি ভালো ভালো , দেখতে সুন্দর ছবি তুলতে পারেন ।তবে সেটা স্টক ইমেজ হিসেবে বিভিন্ন ওয়েব সাইটে বিক্রি করিতে পারবেন।
Conclusion
ইন্টারনেট এমন একটা জগত যেখানে মানুষের অভাব নাই। আর যেখানেই মানুষ আছে সেখানেই ইনকাম করার রাস্তার অভাবে নেই। অনলাইনে ইনকাম করতে গেলে কষ্ট করতে হবেই। কষ্ট করতে জানলে আর একটু ধৈর্য থাকেলই আপনিও ইনকাম করতে পারবেন অনেলাইনে। আজ একটুকুই থাক । ম্যাল্লা বকবক করছি।
কোনকিছু বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করুন।