আউটসোর্সিং কি ? কিভাবে আউটসোর্সিং থেকে আয় করব ।
আজকাল অনলাইন থেকে অনেকেই অনেক ভাবে ইনকাম করে । অনলাইন ইনকাম নিয়ে বিভিন্ন আলোচনায় হয়তো আপনি আউটসোর্সিং কথাটা শুনে থাকবেন ।
এখন অনেক কিছুই মানুষ আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করি নেয় । আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অনেকে তাদের কাজ করিয়ে নিচ্ছে এবং অনেকে সেই কাজ করে দিয়ে ইনকাম করে নিচ্ছে ।
সাধারণত যাদের কোন একটি কাজ দ্রুত করে দেওয়ার দরকার হয় কিন্তু তার কাছে করে নেওয়ার মতো মানুষ থাকে না । তখন সে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজটি করিয়ে নেয় । আবার অনেককে ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা সেই কাজটি করে দিয়ে থাকে ।
আউটসোর্সিং সাধারণত অনলাইন – অফলাইন দুই জায়গাতেই হয়ে থাকে । তবে অনলাইনের আউটসোর্সিং খুবই জনপ্রিয় কারণ এখানে থেকে আপনি ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন ।
আজকে আমরা আউটসোর্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ।
আরো পড়ুন,
আউটসোর্সিং কি ?
আউটসোর্সিং বলতে মূলত কোন একটি কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া কে বোঝায় ।
ইংরেজি শব্দ Outsourcing শব্দটি Out ও Source থেকে এসেছে । এখানে Out শব্দের অর্থ বাইরে এবং Source শব্দের অর্থ উৎস । অর্থাৎ বাইরের কোনো উৎস থেকে কোন একটি কাজ করিয়ে নেওয়াকে আউটসোর্সিং বলে ।
আজকাল অনেক বড় বড় কোম্পানি থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায় পর্যন্ত অনেকে কাজ আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করিয়ে নেওয়া হয় ।
যেমন ধরুন, কোন একটি কোম্পানির ওয়েবসাইট তৈরি করা প্রয়োজন । একটি মাত্র ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কে চাকরি দেওয়া কখনোই কোম্পানিটির জন্য লাভজনক নয় ।
তাই তখন কোম্পানিটি আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কোন একটি ব্যক্তিকে বা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটটি তৈরি করিয়ে নিতে পারে । এতে তারা কম খরচে তাদের কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে ।
আউটসোর্সিং এর কাজ সাধারণত চুক্তি ভিত্তিক হয়ে থাকে । আউটসোর্সিং ব্যাপারটি জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে । এর মধ্যে অন্যতম হলো দ্রুত সমস্যা সমাধান পাওয়া ,কম খরচে কাজ করিয়ে নেওয়া এবং কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই কাজ করিয়ে নেওয়া ।
এখন অনেকেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনেক কোম্পানির অনেক কাজ করে দিয়ে থাকে । এক্ষেত্রে কোম্পানি আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেয় এবং ফ্রিল্যান্সাররা সেই কাজ করে টাকা ইনকাম করে ।
আউটসোর্সিং কত প্রকার এবং কি কি
আউটসোর্সিং এর কাজের উপর ভিত্তি করে আউটসোর্সিং বেশ কয়েক প্রকারের হতে পারে ।
অনেক কোম্পানি আছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে কাজ করিয়ে নেয় । আবার কিছু কোম্পানি আছে যারা ফিজিক্যাল কাজকর্ম আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করিয়ে নেয় । তবে মোটা দাগে আউটসোর্সিং কে চার ভাগে ভাগ করা যায় ।
সেগুলো হল:
- Professional outsourcing
- Operational outsourcing
- Manufacturing Outsourcing
- Project Outsourcing
- Professional outsourcing
এক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট একটি কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য একজন প্রফেশনাল ব্যক্তিকে হায়ার করা হয় এবং তাকে দিয়ে ওই কাজটি করিয়ে নেওয়া হয় ।
ছোট কাজের জন্য সাধারণত এরকম করা হয় । প্রফেশনাল আউটসোর্সিং, অনলাইন এবং অফলাইন উভয়ের মাধ্যমে করা যেতে পারে ।
যেমন: আমাদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক কোন গোলযোগ হলে একজন ইলেকট্রিক টেকনিশিয়ান কে দিয়ে আমরা কাজটি করিয়ে নেই । আবার অনেকের ওয়েবসাইট তৈরি করতে বা একটি লোগো ডিজাইন করতে হলে । অনলাইন থেকে কোন ফ্রিল্যান্সারের কাছে আমরা এসব কাজ করিয়ে নিতে পারি ।
- Operational outsourcing
ধরুন, আপনার একটি অনলাইন শপ রয়েছে এবং আপনি সেখান থেকে পণ্য বিক্রি করেন । এখন ডেলিভারি দেওয়ার জন্য আপনি নিজে যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেলিভারি দিতে থাকেন তাহলে আপনার পক্ষে কুলানো সম্ভব নয় ।
এসব সমস্যার জন্য সাধারণত কোন কুরিয়ার সার্ভিস এর সাহায্য নেওয়া হয় । যার ফলে অল্প খরচে আপনি প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে পারবেন । এই ব্যাপারটিকে অপারেশনাল আউটসোর্সিং বলা হয় ।
অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোন কাজ কোন কোম্পানি বা ব্যক্তির মাধ্যমে করিয়ে নেওয়া হল অপারেশনাল আউটসোর্সিং । অনেক বড় বড় কোম্পানি এভাবে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে তাদের কাজ করিয়ে নেয় ।
যেমন: বড় বড় অনলাইন শপ, বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি যারা খাদ্যদ্রব্য বা অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করে তাদের পণ্য ডিস্ট্রিবিউটের জন্য এভাবে কাজ করিয়ে নেয় ।
- Manufacturing Outsourcing
মনে করেন, আপনার একটি ল্যাপটপের কোম্পানি রয়েছে । যেখানে আপনি ল্যাপটপ তৈরি করে বিক্রি করেন ।
একটি ল্যাপটপ তৈরি করার জন্য ram ,hard disc, processor সহ আরো অন্যান্য কম্পনেন্ট এর প্রয়োজন হয় ।
এসব কিছু আপনার পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয় । তাই এগুলো হয়তো আপনি অন্য কোন কোম্পানি থেকে কিনেন । তারপর এগুলো ব্যবহার করে ল্যাপটপ তৈরি করেন ।
এই যে আপনি অন্য একটি কোম্পানি থেকে র্যাম, হার্ডডিস্ক, প্রসেসরের মতো যন্ত্র ক্রয় করেন এই বিষয়টিকে ম্যানুফ্যাকচারিং আউটসোর্সিং বলা হয় । অর্থাৎ কোন একটি পণ্য অন্য কোন কোম্পানির দ্বারা প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করে নেওয়া হয় ।
এভাবে আপনার খরচ এবং ঝামেলা কমে যায় এবং আপনি ল্যাপটপ তৈরি করতে পারেন ।
- Project Outsourcing
কোন প্রজেক্ট ভিত্তিতে কোন কাজ অন্য কাউকে দ্বারা করিয়ে নেওয়া কে প্রজেক্ট আউটসোর্সিং বলা হয় ।
যেমন: ধরুন আপনার বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো প্রয়োজন । আপনি একটি কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেন যে তারা আপনার বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে সব সেটআপ করে দিয়ে যাবে ।
এক্ষেত্রে আপনাকে আর কোন কাজ করতে হবে না । তারা সবকিছু করে দেবে । এই বিষয়টি হলো প্রজেক্ট আউটসোর্সিং ।
অর্থাৎ আপনি একটি প্রজেক্ট অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন । সাধারণত অনেক বড় বড় কোম্পানি এভাবে কাজ করিয়ে নেয় । প্রজেক্ট আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করিয়ে নেওয়া কাজ সমূহ হলো: এসিও, সাইবার সিকিউরিটি, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি ।
আউটসোর্সিং শেখার উপায়
আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কোন কাজ করে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন স্কিল থাকতে হয় । তাই কোন কাজ করে দিতে চাইলে আপনাকে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে স্কিল আয়ত্ত করতে হবে ।
যেসব কাজ সাধারণত করানো হয় সেগুলো হল: ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি ।
এসব কোন একটি বিষয়ের উপর ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করে যে কোন একটি মার্কেট প্লেসে আপনি আপনার প্রোফাইল তৈরি করে সহজে ইনকাম করতে পারবেন ।
আউটসোর্সিং থেকে আয়
আউটসোর্সিং থেকে আয় করার জন্য কয়েকটি ধাপ হলো,
- নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা এবং দক্ষ হওয়া ।
- অনলাইনে যেহেতু ইংরেজিতে কমিউনিকেট করতে হয় । তাই কমিউনিকেশনের জন্য ইংরেজি জানতে হবে ।
- আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়ে যে আপনি কাজ করেন । এর প্রমাণ হিসেবে আপনাকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে ।
- এবারে যে কোন একটি মার্কেটপ্লেসে (যেমন: ফ্রিল্যান্সার, ফাইবার, আপওয়ার্ক) আপনার প্রোফাইল তৈরি করতে হবে ।
- এবারের কাজ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে ।
- কোন একটি কাজ পেলে তা ঠিকভাবে যথা সময়ে করে দিতে হবে ।
- দক্ষ না হয় কখনোই কাজ করা শুরু করা যাবে না । কেননা কোন ক্লায়েন্ট একবার নেগেটিভ রিভিউ দিলে নতুন করে আর কেউ কাজ দিতে চাইবে না ।
এক্ষেত্রে আপনি যদি কোন একটি কাজ সম্পর্কে স্কিল ফুল হন অর্থাৎ কোন কাজ খুব ভালোভাবে করতে পারেন । তাহলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন ।
এখানে ওই কোম্পানি আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেয় এবং সাধারণত যারা করে দেয় তারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ওই কাজ করে দেয় । তাই আপনার যদি কোন বিষয়ে স্কিল থাকে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি কাজ করতে পারবেন এবং আউটসোর্সিং থেকে ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন ।
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে আউটসোর্সিং এবং আউটসোর্সিং থেকে আয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ।
অনেকে আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিকে একই মনে করে কিন্তু এরা একই না ।
আউটসোর্সিং মানে হল বাইরের কাউকে দিয়ে কোন একটি কাজ করিয়ে নেওয়া ।
এবং ফ্রিল্যান্সিং মানে ওই কাজটি নিজের ইচ্ছামত করে দেওয়া ।
এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল করতে আমাদের ব্লকটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন ।