দরখাস্ত / আবেদনপত্র লেখার নিয়ম ।
কোনাে পদে নিয়ােগপ্রাশ্তির জন্যে বা ছুটি, বদলি, সাহায্য চেয়ে যথাযথ কর্তপক্ষের কাছে যে আনুষ্ঠানিক পত্র
লেখা হয়, তাকে দরখাস্ত বা আবেদনপত্র বলে।
আবেদনপত্র শুদ্ধ, সুলিখিত এবং তথ্য সংবলিত হওয়া
বাস্থনীয়। অসম্পূর্ণ এবং ভাষাগত ক্রুটিময় আবেদনপত্র অনেক সময় মুল উদ্দেশ্যের বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
পক্ষান্তরে সুন্দর, নির্ভুল, সুলিখিত দরখাস্ত প্রার্থীর যােগ্যতা, দক্ষতা, শিক্ষা ও বুচি সম্পার্কে কর্তৃপক্ষের
অনুকূল দূষ্ট লাভে ও উচ্চ ধারণা পােষণে সাহায্য করে ।
তাই যে-কোনোে আবেদনপত্র বা দরখাস্তে প্রয়ােজনীয় সব তথ্য থাকা দরকার।
আরো পড়ুন,
দরখাস্ত লেখার সময় নিম্নলিখিত দিকগলোর প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হতে হবে :
- প্রাপকর নাম-ঠিকানা
প্রাপকের অংশে নিয়ােগকর্তার নাম, পদ বা নিয়ােগকারী সংস্থার নামের বানান সঠিক এবং ঠিকানা নির্ভল হতে হবে। অনেক সময় ঝামেলা এড়াত বা গােপনীয়তা রক্ষা করতে
পােস্টবক্সু কিংবা কোনাে পত্রিকার মাধ্যমে দরখাস্ত আহান করা হয়।
যেমন ;
বিজ্ঞাপন দাতা
পােস্ট বক্স নং ০৬৫
প্রযত্নে : দৈনিক ইত্তেফাক
ঢাকা।
- বিষয়
এ আংশে কাঙ্খিত বিষয় বা পদের কথা স্ষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। আবদনের মুল বিষয়টি যেন কর্তৃপক্ষ সহজে অনুধাবন করতে পারে । সে জন্য সরল ভাষায় তার উল্লেখ প্রয়োজন ।
- সস্বােধন
আনুষ্ঠানিক সস্বোধন হবে : মহােদয়, মহাত্বন, জনাব ইত্যাদি।
- আবেদনের সূত্র
সাধারণত পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চাকরির নিয়ােগের কথা জানা যায়
। তাই বিজ্ঞশ্তি প্রকাশের তারিখসহ সংশ্রিষ্ট পত্রিকার সূত্র উল্লখ করে । অথবা বিশবস্ত সূত্রের কথা জানিয়ে আবেদনপত্রের বক্তব্য শুর করতে হয়।
- আবশ্যিক তথ্য
আবেদনপত্রে আবেদনকারীর পূর্ণ নাম, বাবা-মায়ের নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান
ঠিকানা, জন্মতারিখ, নাগরিকত্ব, শিক্ষাগত যােগ্যতার বিবরণ ইত্যাদি যথাযথভাবে সন্নিবেশ করতে হবে ।
- অতিরিক্ত তথ্য
কোনাে উচ্চতর ডিগ্রি, প্রশিক্ষণ কোর্স বা সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তাও
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা প্রয়ােজন।
- সংযুক্তি
যেমন : বিভিন্ন পরীক্ষা পাসের সনদ, প্রাশ্ত নম্বরপত্র, প্রশংসাপত্র, নাগরিকতের সনদ, অভিজ্ঞতার দরখাস্তের শেষে আবেদনে বর্ণিত তথ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে যা কিছু সংযুক্ত করা হয় ।
- মার্জিন
আবেদনপত্রে প্রয়ােজনীয় মার্জিন থাকতে হয় । পৃষ্ঠার উপরে এবং বামে প্রয়ােজনীয় মার্জিন রেখে দরখাস্ত লিখতে হবে।
আবেদন পত্রের কিছু উদাহরণ
প্রশংসাপত্র চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট দরখাস্ত ।
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক
জাহানারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,নােয়াখালী।
বিষয় ; প্রশংসাপন্রের জন্য আবেদন।
জনাব,
অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় আমি জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। স্কুলে গত পাচ বছর অধ্যয়নক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে আমি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম। কোনো আইনশৃঙ্লা বিরাধী কাজের সাথে আমার কোনাে সম্পক্তুতা ছিল না। আমি কলেলজে উচ্চ-মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হতে ইচ্ছুক। তাই আপ
স্বাক্ষরিত একটি প্রশংসাপত্র অত্যন্ত প্রয়াোেজন ।
অতএব অনুগ্রহপূর্বক আমাকে চারিত্রিক ও শিক্ষাবিষয়ক প্রশংসাপত্র প্রদান করে বাধিত করবেন।
বিনীত
আপনার একান্ত অনুগত-
(নাহিদ সুলতানা পলি) |
এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রী
পরীক্ষার ক্রমিক নম্বর ৭ ব্যবসায় শিক্ষা শাখা
জাহানারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌরসভার চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন।
মাননীয়
পৌীরসভা চেয়ারম্যান
ফুলবাড়িয়া পৌরসভা,
ময়মনসিংহ।
বিষয় : আর্সোনিকমূক্ত পানি সরবরাহের আবেদন।
জনাব,
সবিনয়ে নিবেদন এই যে, আমরা ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের অধিবাসী। এই এলাকা খুবই
ঘনবসতিপূর্ণ। কয়েকটি গার্মেন্টস, পৌর-বাণিজ্যবিতানসহ বেশ কয়েকটি কারখানা থাকায় এই এলাকা
ফুলবাড়িয়া পৌরসভার সবচেয়ে গুরুতুপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জরিপ চালিয়ে এলাকার অধিকাংশ চাপাকলের পানিতে ভয়াবহ আর্সোনিকের দূষণ আছে বলে প্রমাণ
পেয়েছেন। আর্সেনিকযুক্তু চাপাকলগুলোেতে লাল রং দিয়ে শনাক্ত করে এগুলোর পানি পান না করার জন্য
এলাকার মানুষদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তবু অজ্ঞতাবশত অনেক মানুষ আর্সনিক্যুক্তু পানি ব্যবহার করে
মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। এলাকায় বর্তমানে বিশুস্ধ পানীয় জলের তীর অভাব বিরাজ করছে। তাই অতিসতের আর্সেনিকমুক্তু পানি সরবরাহ করা দরকার।
অতএব মহােদয়ের সমীপে বিনীত আবেদন, আর্সেনিকমুক্তু পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যম এলাকাবাসীকে মারাত্ব্ক স্বাস্থ্যঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি বিষয়। তাই জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়ােজন।
বিনীত
লালবাড়িয়া পৌরবাসীর পক্ষে,
মাে. সােহরাব পাশা
লালবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
আশা করি আবেদনপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেয়েছেন।