মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ( অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ )
আজকালকার দিনে কম বেশি সবাই ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করে ।
কিন্তু অনেকের কাছেই পিসি / ল্যাপটপ থাকে না ।
তাই ফোন দিয়েই ভিডিও এডিট করার চিন্তাভাবনা করে থাকে ।
আজকাল বিভিন্ন ধরনের এন্ড্রয়েড অ্যাপ রয়েছে ।
যেগুলো দিয়ে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ভিডিও এডিট করতে পারবেন ।
যে ভিডিও দেখে কেউ বলতে পারবেনা সেটা মোবাইল দিয়ে এডিট করা হয়েছে।
না পিসি দিয়ে মোবাইল দিয়ে এডিট করা হয়েছে।
ভিডিও এডিট করার জন্য নূন্যতম 4gb ram এবং কোয়াড কোর প্রসেসর এর মোবাইল থাকতে হবে ।
এর চেয়ে কম কনফিগারের ফোন হলেও ভিডিও এডিট করা যাবে ।
সেক্ষেত্রে একটু ল্যাগ দেখতে পারেন এবং ভিডিও রেন্ডার হতে একটু বেশি সময় নিবে ।
আরও পড়ুন,
ফোন দিয়ে ভিডিও এডিট করার অ্যাপ
ফোন দিয়ে ভিডিও এডিট করার ক্ষেত্রে ভিডিও ক্রপ করা, ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করা ,লেখা এড করা, ট্রিম করা, বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট যোগ করা সহ আরো নানা ধরনের কাজ করা যায়
আপনি যদি খুব ভালোভাবে কোন একটি সফটওয়্যার বা অ্যাপ এর ব্যবহার শিখে যান ।
তাহলে একদম প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন ।
আসুন এবার দেখি কয়েকটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ।
যেগুলো দিয়ে ভিডিও এডিট করা যায়।
PowerDirector – Video Editor
পাওয়ার ডিরেক্টর একটি খুবই শক্তিশালী ভিডিও এডিটিং অ্যাপস ।
এর কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
- যেকোনো ফ্রেমের জন্য ভিডিও তৈরি করা, ভিডিও স্বচ্ছতা, রোটেশন, অবস্থান এবং স্কেল নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
- সর্বোচ্চ 4k পর্যন্ত ভিডিও এডিট করা এবং এক্সপোর্ট করা যায় ।
- ফাস্ট ফরোয়ার্ড এবং স্লো মোশন এর ভিডিও তৈরি করা যায় । অর্থাৎ ভিডিওর গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
- অ্যাপটির ক্রোমা কি নামে একটি টুলস ব্যবহার করে । গ্রিন স্কিন সম্বলিত ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করা যায়।
- ভিডিও সরাসরি ফেসবুক এবং ইউটিউবে আপলোড করা যায় । অথবা সরাসরি যে কোন প্লাটফর্মে শেয়ার করা যায়।
এগুলো ছাড়াও তোমার ডিরেক্টর অ্যাপ এর আরো অনেক সুবিধা রয়েছে ।
যেগুলো ব্যবহার করে প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করা যায় ।
এই অ্যাপের একটি সমস্যা হল ফ্রি ভার্সনে ভিডিও এডিট করলে ওয়াটার মার্ক বা হলগ্রাম থেকে যায় ।
প্রিমিয়াম ভার্সনে ওয়াটার মার্ক বা হলগ্রাম থাকে না ।
KineMaster – Video Editor
কাইনমাস্টার ও একটি পাওয়ার ফুল ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ।
এর মাধ্যমে প্রায় প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করা যায় ।
কাইনমাস্টারের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
- ভিডিও কাট, ক্রপ, জুম ইন, জুম আউট ,স্টিকার অ্যাড করা, বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট যোগ করা সহ আরো অনেক কিছু করা যায় ।
- কালার ফিল্টার এবং কালার এডজাস্টমেন্ট করা যায় ।
- এই অ্যাপের মাধ্যমে সর্বোচ্চ 4k 30 fps এর পর্যন্ত ভিডিও এডিট এবং এক্সপোর্ট করা যায় ।
- ভিডিওতে ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড মিউজিক এড করা যায় এবং ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করা যায় ।
- এগুলো সহ আরো অনেক ধরনের স্পেশাল ফিচারস এই অ্যাপের মধ্যে রয়েছে।
FilmoraGo – Free Video Editor
অনেক ইউটিউবার ফিলমোরাগো অ্যাপটি ব্যবহার করে থাকে ।
তাদের ভিডিও এডিট করার জন্য এটি একটি খুবই ভালো মানের ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ।
এর মাধ্যমে ভিডিও এডিটিং এর সকল প্রকার কাজ মোটামুটি করা যায় ।
এবং এর ভিতরে থাকা বেশিরভাগ ইফেক্ট এবং ফিচার্স গুলো ফ্রিতেই পাওয়া যায় ।
ফিফিলমোরাগো অ্যাপটি কিছু বৈশিষ্ট্য:
- রিয়েল টাইম ভিডিও এডিট করা যায় । অর্থাৎ ভিডিও এডিট করার সময় আপনি সরাসরি ভিডিও দেখতে পারবেন।
- অনেক ধরনের টুলস এবং ইফেক্ট রয়েছে । যার মধ্যে বেশিরভাগই ফ্রিতে পাওয়া যায় ।
- এদের টেমপ্লেট এবং ইফেক্ট অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে।
Adobe Premiere Clip
ফ্রিতে সবচেয়ে ভালো ভিডিও এডিটিং অ্যাপ হিসেবে এই অ্যাপটি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয় ।
এর মধ্যে সবকিছুই প্রায় বিনামূল্যে পাওয়া যায় ।
এবং অনেক টেমপ্লেট এবং ফিচার্স রয়েছে ।
Adobe Premiere Clip অ্যাপটির বৈশিষ্ট্য:
- অটোমেটিক ভিডিও ক্রিয়েশন টুলস এর মাধ্যমে যেকোনো ভিডিও ক্লিপ এবং ছবিকে ভিডিওতে পরিণত করে এডিট করা যায় ।
- ভিডিও কাটিং, টিমিং, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এড করা, ভিডিওতে ইফেক্ট যোগ করা, ভিডিও ট্রানজেকশন করা সহ আরো নানা ধরনের কাজ এই অ্যাপের মাধ্যমে করা যায় ।
VITA – Video Editor and Maker
ভিটা অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি যেকোনো ধরনের ভিডিও এডিট করতে পারবেন ।
ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক সহ সব ধরনের ভিডিও এডিট করা যায় ।
এই অ্যাপটি ব্যবহার খুবই সহজ ভিডিও এডিট করা যায়।
আপনি নিজেই এই অ্যাপের ব্যবহার বুঝতে পারবেন ।
ভিটা অ্যাপটির কিছু বৈশিষ্ট্য:
- বিনামূল্যেই হলগ্রাম বা ওয়াটার মার্ক রিমুভ করা যায় ।
- অর্থাৎ এর কোন প্রিমিয়াম ভার্সন নেই ।
- ফ্রিতেই হলোগ্রাম বা ওয়াটার মার্ক রিমুভ করা যায়।
- এর মধ্যে অনেক ভিডিও টেমপ্লেট এবং ইফেক্ট রয়েছে । যেগুলো ব্যবহার করে আপনার ভিডিওকে খুব সহজেই আরো সুন্দর করতে পারবেন ।
- ভিডিও সর্বোচ্চ এইচডি কোয়ালিটি পর্যন্ত এডিট এবং এক্সপোর্ট করা যায়
- ভিডিও শ্লো মোশন এবং ফাস্ট ফরোয়ার্ড করা যায় । অর্থাৎ ভিডিওর গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
- ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করার জন্য অনেক ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক রয়েছে । এছাড়াও আপনি নিজেও সাউন্ড এড করতে পারবেন ।
শেষ কথা
আজকে আমরা বেশ কয়েকটি মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বা অ্যাপ সম্পর্কে জানলাম ।
যেগুলো ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ভিডিও এডিট করা যায় ।
এর মধ্যে কিছু অ্যাপ রয়েছে একদম ফ্রি ।
আবার কিছু অ্যাপ রয়েছে প্রিমিয়াম অর্থাৎ টাকা দিয়ে কিনতে হয় ।
আবার কিছু অ্যাপ এর প্রিমিয়াম ভার্সন রয়েছে ।
অর্থাৎ এর কিছু এক্সট্রা ফিচার্জ পাওয়ার জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবে ।
আপনি যদি একদম বিগেনার হন ।
তাহলে ফ্রি অ্যাপগুলো ট্রাই করতে পারেন ।
এই অ্যাপ গুলোর মাধ্যমে যদি আপনি ভালোভাবে ভিডিও করতে পারেন ।
তাহলে একদম প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করতে পারবেন ।