ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ।

দিন দিন ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । আগে তো শহর অঞ্চলে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হয়; এরকম ব্যানার দেখা যেত । কিন্তু এখন মফস্বল অঞ্চল, এমনকি গ্রাম অঞ্চলেও এরকম বিলবোর্ড দেখা যায় । 

আপনার মনে হয়তো এই প্রশ্নটি বারবার জেগেছে যে ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটি কি এবং কিভাবে শিখে, কিভাবে এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা যায় । 

তাই আজকে আমরা এই পোস্টে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে সবকিছু জানাবো ।

ফ্রিল্যান্সিং কি

ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থ হলো মুক্ত পেশা । অর্থাৎ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে থেকে আপনার ইচ্ছামত কাজ করতে পারবেন । 

ফ্রিল্যান্সিং বলতে মূলত ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের কাজ করে দেওয়া কে বোঝায় । দিন দিন ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে । 

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ঘরে বসেই কাজ করে দিয়ে ফ্রিল্যান্সাররা টাকা ইনকাম করতে পারছে । এবং ক্লাইন্টরা তাদের কাজ খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা করিয়ে নিতে পারছে । এতে দুই পক্ষই উপকৃত হচ্ছে । 

সাধারণত যারা কাজ দিয়ে থাকে তারা ইউরোপের বা আমেরিকার মতো দেশগুলো তে থাকে । আর যারা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কাজ করে । তারা আমাদের মতো এশিয়ান কান্ট্রিতে থাকে ।

যার ফলে ডলার, ইউরোতে পেমেন্ট পাওয়া যায় । এসব কারেন্সি কে টাকায় বা রুপিতে কনভার্ট করলে অনেক বেশি হয় । তাই অল্প কাজ করেও অনেক বেশি টাকা ইনকাম করা যায় । এজন্যই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয় হয়েছে ।

অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের মার্কেটপ্লেস রয়েছে । যেখানে ক্লায়েন্টরা কাজ দিয়ে থাকে এবং ফ্রিল্যান্সাররা সেখান থেকে কাজ নিয়ে তা করে দেয় । কিছু মার্কেটপ্লেস এর উদাহরণ হল: freelancer, upwork, fiver ইত্যাদি । 

এক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের যুবকদের মধ্যে দশজনের একজন বেকার   বাংলাদেশের অনেকে গ্রাজুয়েট করেও বেকার রয়েছে । ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে তাদের কাজের সংস্থান হতে পারে এবং তারা স্বাবলম্বী হতে পারে ।

আন্তর্জাতিক এক প্রতিষ্ঠানে জরি অনুযায়ী  । এশিয়ার মধ্যে ভারতের পরে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থান । বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি কাজ করে । 

আবার অনেকেই নিয়মিত চাকরির পরে ফ্রিল্যান্সিং করে একটু বাড়তি অর্থ ইনকাম করতে পারে ।

বাংলাদেশ সরকার এখন ফ্রিল্যান্সারদের অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে । ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় । ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নির্দিষ্ট আইডি কার্ডের ব্যবস্থ করা হয়েছে । 

এছাড়াও মানুষজনকে ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার অনেক ফ্রি ক্যাম্পের আয়োজন করে থাকে । যার মাধ্যমে মানুষজনকে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হয় । 

বাংলাদেশ সরকারের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৬ কোটি ৫০ লক্ষ । এবং তারা বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে নিয়ে আসে । যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে অনেক অগ্রগতি হচ্ছে । 

ফ্রিল্যান্সিং করে নিজেও যেমন স্বাবলম্বী হওয়া যায় । তেমনি রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে দেশের জন্য কাজ করা যায় ।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কী প্রয়োজন

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনার কাছে বেশ কয়েকটি জিনিস থাকতে হবে । এবং সাধারণ কিছু স্কিল থাকতে হবে ।

সেগুলো হল:

  • প্রথমেই একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার অথবা একটি ল্যাপটপ এবং ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে । সবচেয়ে ভালো হয় উচ্চ গতি সম্পন্ন ওয়াইফাই থাকলে ।
  • একটি এন্ড্রয়েড ফোন থাকতে হবে ।
  • কম্পিউটারের বেসিক কাজকর্ম সম্পর্কে জানতে হবে ।

যেমন: এম এস ওয়ার্ড, গুগল ডকস, এক্সেল, গুগল সীট । এসব সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে ।

  • কমিউনিকেশন করার জন্য ইংরেজি জানতে হবে । 

সাধারণত মেসেজের মাধ্যমে বায়ারের সাথে কন্টাক করা হয় । তাই কথা বলার জন্য ইংরেজি জানতে হবে ।

  • পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে । 

অনেকে মনে করে যে মার্কেটপ্লেস দিয়ে বিট করলেই টাকা পাওয়া যায় । কিন্তু ব্যাপারটা এরকম নয় । অনেক পরিশ্রম করে আপনাকে একটি কাজ নিতে হবে এবং সেটি সুন্দরভাবে করে দিতে হবে যার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হবে ।

  • নতুন নতুন জিনিস শেখা মানসিকতা থাকতে হবে ।

এবার আসুন দেখি ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ?

আরো পড়ুন,

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে সর্বপ্রথমেই আপনাকে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে কোন স্কিল থাকতে হবে । সেই স্কিল বিক্রি করেই আপনি টাকা ইনকাম করবেন ।

ধরুন, আপনি সুন্দর লোগো বা বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে পারেন । আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে মানুষকে বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন । 

তাই প্রথমেই আপনাকে একটি বিষয়ে স্ক্রিল আয়ত্ত করতে হবে । 

সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ইস্কিল গুলো হলো:

  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • কনটেন্ট রাইটিং

বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার উপরের এই পাঁচটি কাজ করে থাকে । বাংলাদেশ এগুলোই সবচেয়ে জনপ্রিয় ।

এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং কন্টেন্ট রাইটিং এগুলো সহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয়কে একত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয় । আপনাকে তো আগেই বলা হয়েছে বাংলাদেশীরা সবচেয়ে বেশি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ।

তবে এগুলো ছাড়া আরো অন্যান্য অনেক কাজ রয়েছে সেগুলো হলো:

1. Article Writer

2. Blog Writer

3. eBook Writer

4. Fiction Writer

5. Web Content Writer

6. Copywriter

7. Writing Translator

8. Editor

9. Proofreader

10. Press Release Writer

11. Ghost Writer

12. Legal Writer

13. Resume & Cover Letter Writer

14. Product Description Writer

15. Transcription Writer

16. Technical Writer

17. Guest Writer

18. Academic Writing

19. Logo Designer

20. Photoshop Editor

21. Website Mockup Designer

22. Photo Editor

23. Photo Retouching

24. Graphic/Poster Designer

25. Icon Design

26. Book Cover Designer

27. T-Shirt Designer

28. Infographic Designer

29. CAD Designer

30. Vector Designer

31. Cartoon Artist

32. Banner/Ad Designer

33. Wedding Album Designer

34. Sketch Artist

35. Digital Artist

36. Vector Illustrator

37. Print Designer

38. Concept Artist

39. Oil Painter

40. Flyer Designer

41. Brochure Designer

42. Front-End Designer

43. Back-End Developer

44. UX / UI Designer

45. Plugin Developer

46. WordPress Expert

47. Web Font Designer

48. Bug Fixing

49. Server Administrator

50. Website Builder

App Development

51. App UI Designer

52. App Developer

53. Game Developer

54. Financial Advisor

55. Legal Consultant

56. SEO Consultant

57. Health Advisor

58. Parenting Advisor

59. Fitness Advisor

60. Career Advisor

61. Intro Videos

62. Explainer Videos

63. Video Testimonials

64. Stop-Motion Videos

65. Video Animator

66. Social Media Video Creator

67. YouTube Video Editor

68. Voice-Over Artist

69. Audio Editor

70. Audio Translator

71. Music Composition

72. Record Podcast Ads

73. Virtual Assistant

74. Data Entry

75. Marketing Strategist

76. Social Media Manager

77. Live Chat Agent

78. Recruiting Agent

79. Customer Support Representative

80. Zendesk Consultant

81. Project Manager

82. Bookkeeper

83. Technical Assistant

84. Explainer Video Animation

85. 3D Model Designer

86. Lead Generator

87. Presentation Designer

88. Online Advertising Expert

89. Social Media Editor

90. Email Designer

91. Email Outreach

92. Traffic Generation

93. Write Product Reviews

94. Keyword Research

95. PR Submission

96. Market Research

97. Branding Services

98. Outdoor Advertising

99. Content Strategist

100. Content Marketer

101. Freelance Photographer

102. YouTube Thumbnail Artist

103. Website Critique

104. Data Analyst

105. Create Documents

106. Gaming Help

107. Cooking Lessons

108. Makeup Lessons

109. User Testing

110. Travel Planner

111. Private Tutor

112. Twitch Emote Creator

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কাজ রয়েছে । 

এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি পছন্দের কাজ আপনি শিখতে পারেন । তারপর ওই কাজে ভালো স্কিল আয়ত্ত করতে হবে । অর্থাৎ খুব ভালোভাবে দক্ষ হতে হবে ।

এই জিনিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । মনে করেন, আপনি একটি কাজ পেলেন । কিন্তু আপনি ঠিকমতো কাজটি করে দিতে পারলেন না । 

তাহলে বায়ার আপনাকে নেগেটিভ রিভিউ দিবে । যার ফলে আপনাকে আর কেউই কাজ দিতে চাইবে না । তাই খুব ভালোভাবে কাজ না শিখে কখনোই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন না ।

ঠিকমতো কাজ শেখার পর যে কোন একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনার প্রোফাইল তৈরি করতে হবে । সেটি হতে পারে ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্ক বা ফাইবার ।

বিগেনার হিসেবে ফ্রিল্যান্সার অথবা ফাইবারে প্রফাইল তৈরি করে কাজ শুরু করে দিতে পারেন ।

কোথায় থেকে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখব

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই এর জানার, আমাদের মনে আসে কোথায় থেকে ফ্রিল্যান্সিং ।

অনেক স্থান থেকেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখতে পারবেন সেগুলো হল:

  • ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে আপনি নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে কাজ শিখতে পারবেন ।
  • বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়ে থাকে । সেখান থেকে আপনি কাজ শিখতে পারবেন । তবে ভর্তি হওয়ার আগে সেন্টারটি কেমন সম্পর্কে খোঁজ নিতে ভুলবেন না ।
  • অনেক বাংলাদেশী অনলাইন প্রতিষ্ঠান রয়েছে । যারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কোর্স করিয়ে থাকে ।
  • আবার কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে । যারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কোর্স করিয়ে থাকে ।
  • এসব জায়গা থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখা যায়। 

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব

ফ্রিল্যান্সিং এর ইনকামের সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে আপনার স্কিনের উপর । এবং আপনি যে কাজ করেন তার মার্কেট ভ্যালুর উপর ।

আপনি যত স্কিল্ড হবেন এবং আপনার কাজের মার্কেটে ভ্যালু যত বেশি হবে । আপনি তত ইনকাম করতে পারবেন । 

বাংলাদেশে এখন অনেক মানুষ হয়েছে যারা শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে । আপনি ইউটিউবে গেলে অনেক ভিডিও দেখতে পারবেন । 

অনেকে দেখবেন ফ্রিল্যান্সিং করে নিজেদের কোম্পানি দাড় করিয়ে ফেলেছে । আপনি যত পরিশ্রম করবেন তত ইনকাম করতে পারবেন । এখানে পরিশ্রম এবং স্কিলের বিপরীত কিছু নেই ।

শেষ কথা

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই সম্পর্কে মোটামুটি হয়তো ধারণা পেয়েছেন ।

প্রথমে একটি বিষয় সিলেক্ট করুন এবং সেখানে কাজ শিখে দক্ষ হন । তারপরে ওই বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসা কাজ করুন ।

এভাবেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন । ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আরো বেশি জানতে youtube এর বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন ।

Leave a Comment